টেস্টের আগে জামাইকে এত ফুরফুরে দেখেননি অঞ্জলির মা
গোটা ক্রিকেট সমাজ তাকিয়ে তিনি জীবনের শেষ টেস্টে বড় রান পান কি না! বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে দুশোতম টেস্টের মাইলফলক ছুঁতে চলেছেন! তা-ও কিনা নিজের শহরের মাঠে। পাহাড়প্রমাণ চাপ অবসর টেস্টেও। কিন্তু তাঁর পরিবারেরই এক জন মনে করেন, ওয়াংখেড়েতে নামার আগে সচিন তেন্ডুলকর দারুণ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। যথেষ্ট রিল্যাক্সড। তিনি সচিনের শাশুড়ি অ্যানাবেল মেটা। অঞ্জলি তেন্ডুলকরের মা।
সচিন দুশোতম টেস্টের যে পাঁচশো টিকিট এমসিএ থেকে নিয়েছেন তাঁর পরিবার ও বিশ্বজোড়া বন্ধুবান্ধবদের ওয়াংখেড়েতে উপস্থিত থাকার জন্য, তার একটা টিকিটের মালকিন অ্যানাবেল। “হ্যাঁ, আমরা সবাই ওয়াংখেড়েতে যাচ্ছি,” বিখ্যাত জামাইয়ের বিদায়ী টেস্টের আগের দিন বললেন অ্যানাবেল। সঙ্গে আরও যোগ করছেন, “সচিনের মা কোনও দিন ছেলের কোনও আন্তর্জাতিক খেলা দেখতে মাঠে যাননি। কিন্তু এই ম্যাচটা দেখতে তিনিও স্টেডিয়াম যাবেন।”

সচিন-কন্যার সঙ্গে অ্যানাবেল।
অ্যানাবেল আদতে ব্রিটিশ। অঞ্জলির বাবা আনন্দ মেটার সঙ্গে তাঁর পরিচয় লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সে। বিয়ের পর মুম্বইয়ে এসে অ্যানাবেল সমাজসেবায় জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে এক সমাজসেবী সংস্থা ‘আপনালয়’-এর প্রেসিডেন্টও তিনি। মুম্বইয়ের বস্তিজীবনের উন্নতিতে কাজ করে থাকে সচিনের শাশুড়ির সমাজসেবী সংস্থা। কিন্তু ভদ্রমহিলার সঙ্গে কথা বলতে গেলে ক্রিকেটে ঢুকে পড়তে তিনি এক মুহূর্ত সময় নিলেন না।
“আমার বাবা আর দাদু ক্রিকেটার ছিলেন। খেলাটাকে প্রচণ্ড ভালবাসতেন। আমার ভাই রিচার্ড-ও কিছুটা ক্রিকেট খেলেছে। আমার স্বামী অবশ্য ব্রিজ চ্যাম্পিয়ন। আন্তর্জাতিক ব্রিজ প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্বও করেছেন। কিন্তু ও-ও প্রচণ্ড ক্রিকেটভক্ত।” তার পর মুচকি হেসে যোগ করেন, “আর অঞ্জলি তো এক জন ক্রিকেটারকেই বিয়ে করেছে!”
সেই ক্রিকেটার-জামাই জীবনের শেষ টেস্টে মোটেই চাপে নেই বলে দাবি করলেন অ্যানাবেল। “সচিন দুশোতম টেস্ট খেলতে নামার আগে শুধু যে যথেষ্ট রিল্যাক্সড তাই নয়। সত্যি বলতে কী দেশের হয়ে খেলতে নামার আগে ওকে এতটা রিল্যাক্সড আগে কখনও দেখিনি,” বলছিলেন অ্যানাবেল। এটাও বলছেন যে, “ব্যাপারটা আমাকে একটু অবাকই করেছে! তবে আমার মনে হচ্ছে, সচিন ওর শেষ ম্যাচটা চুটিয়ে উপভোগ করতেই চাইছে।”
বান্দ্রায় সচিনের আগের বাড়িতেই এখন অঞ্জলির মা-বাবা থাকেন। এবং সেখানে বসবাস করার ফলে সচিন-কেন্দ্রিক এমন কিছু স্মৃতি অ্যানাবেলের রয়েছে যা খুব কম লোকই জানে। “সচিন ভীষণ লাজুক। আত্মকেন্দ্রিক মানুষই বলা যায়। ওর সমস্ত মনপ্রাণ ক্রিকেটে। ওর ক্রিকেটজীবনের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যাই! কী প্রচণ্ড চাপ আর দায়িত্ব নিয়ে দেশের হয়ে বছরের পর বছর কী সব দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছে! ওর অনেক ম্যাচ আমি দেখেছি। সচিন ব্যাট করার সময় অঞ্জলির মতো আমি নার্ভাস হই না। বরং ব্যাপারটা উপভোগই করি।”

এটা প্রায় সবার জানা যে, অঞ্জলি মেডিসিনের ছাত্রী ছিলেন। সচিনের সঙ্গে বিয়ের আগে পর্যন্ত প্রাইভেট প্র্যাকটিস-ও করেছেন। বিয়ের পর ছেড়ে দেন। যা নিয়ে তাঁর মা-র মন্তব্য, “ওদের দু’জনের বন্ধন জমাট। সচিনের জীবনে প্রতিটা মুহূর্তে অঞ্জলির উপস্থিতি রয়েছে। সচিনের উপর মানুষের পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার চাপ অঞ্জলি যতটুকু পারে ওর সঙ্গে ভাগ করে নেয়। ক্রিকেট থেকে সুইচ অফ করার কাজে ওকে সাহায্য করে। সচিন যখন পরিবারের সঙ্গে কাটায়, বাইরের জগৎ থেকে নিজেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে নেয়।”
সচিনের অবসরের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত অঞ্জলির মা। বললেন, “ওর সিদ্ধান্তকে পুরো পরিবার সমর্থন করে। বেশ কিছু দিন ধরেই আমরা এই ব্যাপারটা নিয়ে আশঙ্কায় ছিলাম যে, এ বার সচিনের ব্যাট তুলে রাখার সময় বোধহয় ঘনিয়ে আসছে।” তার পর ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, “তবে আমি নিশ্চিত, সচিন যে রকম প্রচণ্ড পরিশ্রমী আর একাগ্রমনা, তাতে অবসর জীবনে যে কাজই করুক তাতেই সফল হবে।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.