পুরভোটে মেদিনীপুর
ছোট দলে ভাগ হয়ে প্রচারে জোর সিপিএমে
রাতারাতি ছবিটা একেবারে পাল্টে গিয়েছে। গেল বারেও কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দল বেঁধে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার সেরেছেন সিপিএম প্রার্থীরা। প্রার্থী নিজে আর্জি জানিয়েছেন, ‘এ বার একটু দেখবেন। আপনাদের আর্শীবাদ চাই।’ পাশ থেকে কর্মী-সমর্থকেরা বলে উঠেছেন, ‘প্রার্থী তো আমার-আপনার ঘরের ছেলে। এ বার কিন্তু দেখতেই হবে।’
আর এ বার? দল বেঁধে প্রচার নৈব নৈব চ! দলীয় সূত্রে খবর, এ ভাবে প্রচার করা যাবে না বলে ইতিমধ্যে প্রার্থীদের জানিয়ে দিয়েছে সিপিএম। জানানো হয়েছে, প্রার্থী নিজে বড়জোর তিন-চারজনকে সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের বাড়ি যেতে পারেন। প্রার্থী যেখানে যাবেন, সেই এলাকা বাদ দিয়ে অন্যত্র তিন-চার জন কর্মী- সমর্থক প্রচার সারতে পারেন। এ জন্য ছোট ছোট দল গড়তে হবে। কোনও ভাবে দলের লোকসংখ্যা ১০ জন হবে না। প্রচারে তাঁদেরই সামনের সারিতে রাখতে হবে, যাঁদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, নির্দেশ না- মানার জন্য ইতিমধ্যে এক প্রার্থী নেতৃত্বের কাছে মৃদু ধমকও খেয়েছেন।
হঠাৎ এমন নিয়ম কেন?
সিপিএমের মেদিনীপুর শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কীর্তি দে বক্সীর জবাব, “এটা আমাদের সাংগঠনিক ব্যাপার। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রার্থীদের কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” দলীয় সূত্রে খবর, এ এক-এক এলাকায় এক-এক রকম ভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। কোথাও নির্বাচনী পথসভা হবে, কোথাও ছোট মিছিল। তবে বড় সভা হবে না। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিই যে কৌশলী প্রচারের কারণ, তা মানছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
আগামী ২২ নভেম্বর মেদিনীপুর পুরসভা নির্বাচন। হাতে আর মাত্র কয়েকদিন। পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম। সিপিআই ৩টিতে, ফরওয়ার্ড ব্লক ২টিতে এবং আরএসপি একটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। বাম সঙ্গী বিকাশ পরিষদের প্রার্থী রয়েছে ২টি ওয়ার্ডে। বাকি ৪টি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করছে বামেরা।
পুরভোটের প্রচার ঘিরে ইতিমধ্যে শহরে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। ‘হেভিওয়েট’ নেতা-মন্ত্রীদের এনে প্রচারে এগিয়ে তৃণমূলই। তুলনায় সিপিএম- শিবির নিরুত্তাপ। দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার কর্মী-বৈঠক করছেন। এটুকুই। দলীয় সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে শহর সিপিএমের এক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে প্রার্থী এবং ওয়ার্ডের আহ্বায়কদের কেউ কেউ এলাকায় নির্বাচনী কর্মিসভা করার দাবি জানান, কেউ দাবি তোলেন মিছিলের। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে কর্মিসভার প্রধান হিসেবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নাম প্রস্তাব করা হয়। একাধিক ওয়ার্ড আবার দীপক সরকারের নাম প্রস্তাব করে। ইতিমধ্যে শহর জোনাল থেকে এ সব প্রস্তাব জেলায় পৌঁছেছে। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ, বৃহস্পতিবার ফের শহর সিপিএমের বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রচার-কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। দলের এক জোনাল নেতার কথায়, “এ বার আমরা বাড়ি বাড়ি প্রচারের উপর জোর দিয়েছি। তাই কর্মিসভা-মিছিল বিশেষ হচ্ছে না। আগামী দিনে বাছাই করা কয়েকটি ওয়ার্ডে কর্মিসভা-মিছিল হতে পারে।” ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তি রয়েছে, এমন কর্মী-সমর্থকদের প্রচার কর্মসূচিতে যুক্ত করে, ‘দুর্নীতিগ্রস্তদের’ দূরে রাখার জন্যও দলীয় প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছে সিপিএম।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিপিএমের এই কৌশলী প্রচার ইভিএমে কী প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.