বন্ধ ফ্ল্যাটে মাকে অচৈতন্য করে বেঁধে গামলার জলে ডুবিয়ে খুন করা হল ন’মাসের শিশুকে। তছনছ করা হয়েছে আলমারিও।
বুধবার সন্ধ্যায় হুগলির মানকুণ্ডুতে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে পড়শিরাই শিশুটির মাকে উদ্ধার করেন। প্রাথমিক ভাবে ডাকাতির ঘটনা বলে মনে করা হলেও কে বা কারা এর পিছনে, কেনই বা বাচ্চাটিকে ওই ভাবে মারা হল তা নিয়ে পুলিশ ধন্দে। রাতে হুগলির এসপি সুনীল চৌধুরী বলেন, “শিশুটি কী ভাবে মারা গেল তা ময়না-তদন্তের পরেই বোঝা যাবে। বাড়ির সকলের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। আমরা সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত করছি।”
তিন-চার বছর আগে ভদ্রেশ্বর থানার মানকুণ্ডু স্টেশনের কাছে একটি বড় আবাসনের চারতলায় ফ্ল্যাট কেনেন রেলকর্মী অঞ্জন চৌধুরী। তাঁর অফিস ব্যান্ডেলে। স্ত্রী সুনন্দা ও ন’মাসের ছেলে আর্য ছাড়াও ফ্ল্যাটে থাকেন তাঁর মা তৃপ্তি চৌধুরী। অঞ্জনবাবু অফিসে গিয়েছিলেন। রোজকার অভ্যেসে বিকেল ৫টা নাগাদ হাঁটতে বেরোন তাঁর মা। ফ্ল্যাটে ছেলেকে নিয়ে ছিলেন শুধু সুনন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ হেঁটে ফিরে তৃপ্তিদেবী ফ্ল্যাটের কলিং বেল বাজান। বেশ কয়েক বার বাজানোর পরেও কেউ না খোলায় বৌমার মোবাইলে ফোন করেন তিনি। ফোন বেজে যায়। বিপদ আঁচ করে নীচে নেমে তিনি আবাসনের কিছু ছেলেকে ডেকে আনেন। সকলে মিলে ডেকে সাড়া না পেয়ে শেষমেশ তারা ধাক্কা দিয়ে লক ভেঙে ফেলে। দরজা খুলতেই দেখা যায়, সামনে ছোট খাট উল্টানো। পাশে মেঝেয় পড়ে থাকা বিছানায় মুখ-হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লেপ-কম্বল চাপা দেওয়া অচৈতন্য সুনন্দা। বাথরুমের সামনে জল-ভর্তি গামলায় ন’মাসের শিশু। ঘরের জিনিসপত্র ছড়ানো-ছেটানো, আলমারি খোলা।
আবাসনের লোকেরা পুলিশে খবর দিলে এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষ বাহিনী নিয়ে আসেন। অঞ্জনবাবুকে ফোনে জানানো হয়। তিনি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি চন্দননগরের একটি নার্সিংহোমে ভতি। পুলিশ জানায়, ফ্ল্যাটের দরজায় ইন্টারলক থাকায় তা বন্ধ করে বেরিয়ে যাওয়া যায়। কাজেই খুনের পরে খুনির পক্ষে ওই দরজা দিয়ে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাওয়া অসম্ভব নয়। আবার বারান্দার দরজাও খোলা ছিল। কিন্তু বিকেলে চারতলার বারান্দা বেয়ে কেউ উঠতে বা নামতে পারে, পুলিশ তা মনে করছে না। প্রাথমিক ভাবে বারান্দায় তেমন চিহ্নও মেলেনি। |