চার যুবক। পরনে সেনাবাহিনীর পোশাক। জওয়ানদের মতোই ছোট করে চুল ছাঁটা। সঙ্গে ট্রলি-ব্যাগ, রুকস্যাক। বুধবার ভোরে কাজিরাঙা এক্সপ্রেসে সেনাবাহিনীর জন্য নির্দিষ্ট কামরা থেকে নেমে তারা হাওড়া ব্রিজে উঠতে যাচ্ছিল। কিন্তু ব্রিজের মুখেই সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা ধরলেন তাদের। ট্রলি-ব্যাগ ও রুকস্যাক থেকে বেরলো ১৩১ কেজি গাঁজা।
গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “ধৃতদের নাম রকোভি সুজু, তুকুঘা আওমি, আক্রম আলি এবং চন্দ্রেশ্বর সাহানি। রকোভি ও তুকুঘা ডিমাপুরের বাসিন্দা। অন্য দু’জন ডিমাপুরে থাকলেও তাদের আসল বাড়ি বিহারে।”
গোয়েন্দারাই স্বীকার করছেন, গাঁজা পাচারের এমন কায়দা আগে দেখেননি। তাঁরা প্রথমে সন্দেহ করেছিলেন, জওয়ানদের অজান্তে তাঁদের ব্যাগে গাঁজা ঢোকানো হয়েছে। পরে দেখা যায়, ধৃতদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগই নেই। গোয়েন্দারা জানান, জেরায় ধৃতেরা এক ব্যক্তির নাম বললেও তাঁর কাছেই পাচার হচ্ছিল কি না, তা যাচাইয়ের দরকার। ওই ব্যক্তি পলাতক। |
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, কিছু দিন আগে খবর মেলে, গুয়াহাটি থেকে হাওড়াগামী ট্রেনে গাঁজা পাচারের চেষ্টা চালাচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু যুবক। দিন কয়েক আগে নির্দিষ্ট খবর আসে, কাজিরাঙা এক্সপ্রেসে একশো কেজিরও বেশি গাঁজা ঢুকবে হাওড়ায়। জানা যায়, গাঁজা পাচার হচ্ছে সেনাবাহিনীর জন্য নির্দিষ্ট কামরায়।
লালবাজার সূত্রের খবর, নারকোটিক্স বিভাগের ওসি মৃগাঙ্ক দাসের নেতৃত্বে চার জনের একটি দল বুধবার হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। ওই চার যুবক স্টেশনের বাইরে আসতেই বমাল ধরা পড়ে। গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানায়, উত্তর-পূর্ব ভারতের যে পাচারকারী তাদের মাধ্যমে গাঁজা পাচার করছিল, সে-ই পরামর্শ দেয় জওয়ানের ভেক ধরলে কেউ সন্দেহ করবে না। তাদের কাছে ট্রেনের বৈধ টিকিটও ছিল না বলে গোয়েন্দাদের অভিযোগ।
গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, মণিপুর থেকে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে তারা মঙ্গলবার গুয়াহাটি আসে। সেখান থেকে চড়ে কাজিরাঙা এক্সপ্রেসে। ট্রেনে তাদের কেউ তল্লাশি করেনি বলেই জানিয়েছে তারা। |