ধান গাছে জড়িয়ে রয়েছে মাছির মতো অসংখ্য ছোট ছোট পোকা। এর ফলে ধান গাছটাই শুকিয়ে যাচ্ছে। কালীপুজোর দিন কয়েক আগে থেকেই সমস্যাটি খেয়াল করেন দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই পঞ্চায়েতর মেজে, বালিজুড়ি, মঙ্গলপুর, কুলেকুড়ি-সহ বহু গ্রামে দিন দিন পোকার আক্রমণ বেড়ে চলেছে।
চাষি সত্যেন পাল, রঘুনাথ মণ্ডল, গোবিন্দ মণ্ডল, শেখ শরিফউদ্দিনদের আক্ষেপ, “পিলিন ও নিম্নচাপের জোড়া ফলা থেকে যে ধান রক্ষা পেল সেই ধান ঘরে তোলার আগেই যদি পোকার আক্রমণে শেষ হয়ে যায়, তা হলে কী করব।” উপায় খুঁজে না পেয়ে ব্লক কৃষি দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন বহু চাষি। তবে পোকা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে খুব একটা ভরসা দিচ্ছে না কৃষি দফতরও। কৃষি দফতরের পরামর্শ, ধান ৮০ শতাংশ পেকে গিয়ে থাকলে যত শীঘ্র সম্ভব ফসল ঘরে তুলে ফেলুন। চাষিদের কথায়, এখনও প্রায় ৯০ শতাংশ জমির ফসল কাটাই হয়নি। এখনও অনেক মাঠে ধান সেভাবে পাকেনি। অথচ পোকার আক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে ধান মাঠে রেখে অপেক্ষাও করা সম্ভব নয়। |
দুবরাজপুর ব্লক কৃষি সম্প্রসারণ আধিকারিক গোঁসাই দাস বিশ্বাস জানান, ধানখেতে বাদামি শোষক পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে এই পোকার আক্রমণ শুধু ওই পঞ্চায়েত এলাকাতেই সীমাবদ্ধ নয়। সাহাপুর, পদুমা ও লোবা পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রাম থেকে ফসল আক্রান্ত হওয়ার খবর রয়েছে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার বর্ষা ভাল হওয়ায় দুবরাজপুর ব্লকের মোট চাষযোগ্য (২২,৫৩৮ হেক্টর) জমির ৯০ শতাংশ (২০,২৮১ হেক্টর) জমিতে চাষ হয়েছে। অধিকাংশ জমিতে স্বর্ণ ধান চাষ হয়েছে বলে পিলিন বা নিম্নচাপের বৃষ্টি সে ভাবে ফসল নষ্ট করতে পারেনি। বাদমি শোষক পোকার আক্রমণে এখনও পর্যন্ত ৭৫ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এই পোকা আক্রমণের জন্য সময় মূলত ধান পেকে আসার মুহূর্ত। কিন্তু এত দ্রুত আক্রমণ ছড়ায় ফসলের বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা থাকছেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যে ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করার কথা, সেটাও যথেষ্ট ব্যয় বহুল। গোঁসাই দাস বিশ্বাস বলেন, “যে সব মাঠের ধান এখনও তেমন পাকেনি, সেই সব মাঠে আমাদের পরামর্শ মতো কীটনাশক স্প্রে করতে বলা হয়েছে। তবে ধান প্রায় পেকে গিয়ে থাকলে ঘরে তোলাই সেরা উপায়। তা ছাড়া শীত পড়লে পোকার আক্রমণ কমে আসবে। |