বিমার আওতায় আনা হল নেপাল সংলগ্ন পানিঘাটা চেঙ্গা বনবস্তির ২০০ মানুষকে। মঙ্গলবার অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজ়ারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম (অ্যাক্ট) এর উদ্যোগে এবং স্টেট ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাহায্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেককেই নিখরচায় ‘জিরো ব্যালান্স অ্যকাউন্ট’ খুলে দেওয়া হয়েছে। এ দিন প্রকল্পের সূচনা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনিই প্রথম কয়েকজনের হাতে বিমার শংসাপত্র তুলে দিলেন। প্রকল্পের সূচনা করে গৌতমবাবু বলেছেন, “এই প্রকল্প এই এলাকার মানুষের কাছে আশীর্বাদের মতো। এই উদ্যোগের ফলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের মানুষেরা ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে রসদ খুঁজে পাবে।” পাশাপাশি তিনি এই এলাকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পর্যটক টানার জন্যও এলাকার প্রচার করবেন বলেও জানান। তিনি জানান, কয়েক বছরে এই এলাকাকে দেশের পর্যটনের মানচিত্রে আনা হবে। |
এই উদ্যোগে সামিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে রাজ বসু বলেন, “এই এলাকায় হাতির হানায় প্রতি বছরই একাধিক লোক মারা যান। তাঁদের জন্যই এই উদ্যোগ। আপাতত ২০০ জনকে বিমার আওতায় আনা হলেও ভবিষ্যতে আরও লোককে আনা হবে।” বনবস্তিবাসীদের সবরকম সহায়তার কথা ঘোষণা করেছেন স্টেট ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যসোসিয়েশন-এর সদস্যরাও। তাঁদের স্টেশন ফিডার রোড কম্পোজ়িট ইউনিটের সম্পাদক বিশ্বজিৎ সিংহ রায় বলেন, “আমরা এই উদ্যোগে সামিল হতে পেরে খুশি। সংগঠনের পক্ষ থেকেই টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট ও বিমা করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বাধিক ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমা সুরক্ষা পাওয়া যাবে।”
এই এলাকায় ফসল পাকার সময়ে রাত হলেই নির্দিষ্ট করিডর দিয়ে হাতির পাল নেমে আসে। হাতির হানায় প্রতি বছরই নেপাল সীমান্তে পানিঘাটার ছোট্ট মৌজা চেঙ্গা বনবস্তিতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। বনবিভাগের কাছে আবেদন করে ক্ষতিপূরণ হাতে পেতে পেতে বছর ঘুরে যায়। আবার কখনও বিভিন্ন অজুহাতে ক্ষতিপূরণ পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ে। ফলে মৃত ব্যক্তি ওই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হলে, তাঁর পরিবারও আক্ষরিক অর্থেই পঙ্গু হয়ে পড়ে বলেই মনে করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি, ওই এলাকায় গত তিন বছরে ৫০ জন হাতির হানায় মারা গিয়েছেন। ৩০ জন আহত হয়েছেন এবং প্রায় ১৬০০ ঘরদোর ভেঙেছে। পরে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্যও ভাবা হবে বলে রাজবাবু জানিয়েছেন। |