তুলাইপাঞ্জির ফলনে খুশি চাষি
কৃষি দফতরের সহায়তায় লাভের মুখ দেখছেন উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লকের চাষিরা। কৃষি দফতরের পরামর্শে অড়হর ও মাসকলাই ধানের বদলে সুগন্ধী তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ করেছিলেন তাঁরা। এ বছর সেই ধানেরই রেকর্ড পরিমাণ ফলন হওয়ায় খুশির হাওয়া চাষিদের মধ্যে। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী গৌতম মণ্ডল, হেমতাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সন্ধ্যা বর্মন, ব্লক কৃষি আধিকারিক শ্রীকান্ত সিংহ-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা হেমতাবাদে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ পরিদর্শন করেন।
হেমতাবাদে সুগন্ধী তুলাইপাঞ্জি চাষের জমি ঘুরে দেখছেন কৃষিকর্তারা।
এ বছর কৃষি দফতরের পরামর্শে ব্লকের পাঁচটি পঞ্চায়েতের দু’হাজারেরও বেশি চাষি মাসকলাই ও অড়হর ডালের বদলে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষে নেমেছিলেন। সম্প্রতি, ওই ধান উঠতে শুরু করেছে। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এ বছর ব্লকের মোট ১২৫০ হেক্টর জমিতে ২২৫০ টন তুলাইপাঞ্জি ধানের ফলন হয়েছে। কৃষি দফতরের পরামর্শে গত পাঁচ বছর ধরে ওই ব্লকের চাষিদের একাংশ তুলাইপাঞ্জি ধানের চাষ শুরু করলেও এই প্রথম তাঁরা এত ভাল ফলন পেলেন। হেমতাবাদের আগাপুর এলাকার বাসিন্দা সোলেমান আলি এ বছর প্রথম তিন বিঘা জমিতে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ করেছেন। তিনি বলেন, “প্রতি বিঘা জমিতে ২ হাজার টাকা খরচে ৬ মন তুলাইপাঞ্জি ধানের ফলন পেয়েছি। প্রতি মন ১২০০ টাকা দরে ৬ মন ধান ৭২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। বিঘাপ্রতি লাভ হয়েছে ৫২০০ টাকা। এত দিন মাসকলাই ও অড়হর ডালে বিঘা প্রতি লাভ থাকত ২৫০০ টাকা। প্রতি বছর তুলাইপাঞ্জিই চাষ করব বলে ঠিক করেছি।”
এ বছর হেমতাবাদের বাঙালবাড়ি, হেমতাবাদ, বিষ্ণুপুর, চৈনগর ও নওদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩৪৩ জন চাষি ১২৫০ হেক্টর জমিতে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ করেছেন। গত বছর ১১০০ জন চাষি ৬০০ হেক্টর জমিতে ওই চাষ করেন। গত বছর তুলাইপাঞ্জি ধানের ফলন হয়েছিল ১ হাজার টন। এ বছর যা ২২৫০ টনে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত পাট কাটার পর সেই জমিতেই জুলাই মাস নাগাদ তুলাইপাঞ্জি ধানের গাছ রোপণ করা হয়। নভেম্বরে ধান ওঠে।
গৌতমবাবু বলেন, “কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই সহ বাংলাদেশ ও লন্ডনে বরাবরই সরু ও সুগন্ধি তুলাইপাঞ্জি চালের চাহিদা ও রয়েছে। উত্তরবঙ্গের প্রতি জেলার চাষিদের আদর্শ পরিবেশে তুলাইপাঞ্জি চাষ সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে।” এ বছর তুলাইপাঞ্জি ধানের চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বাড়ার কারণ হিসেবে শ্রীকান্তবাবুর ব্যাখ্যা, “অড়হর ও মাসকলাই ডালের বদলে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ করে প্রত্যেক চাষি এবছর বিঘা প্রতি দু’হাজার টাকার বেশি লাভ করেছেন। চাষিদের মধ্যে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষে আগ্রহ বাড়াতে পাঁচ বছর ধরে প্রচার চালানো হচ্ছে। তুলাইপাঞ্জি ধানের বীজও সরবরাহ করা হয়েছিল। এ সব কারণেই এবছর ব্লকে রেকর্ড পরিমাণে চাষ হয়েছে।” কৃষি দফতর সূত্রে খবর, জৈব সার প্রয়োগ করে কম জলে তুলাইপাঞ্জির চাষ হয়। পোকার আক্রমণ নেই। সহজ পরিচর্যার জন্যও চাষিদের একাংশের আগ্রহ বেড়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.