রাজ্য জুড়ে আলু-সমস্যার মধ্যেই দাম ঠিক করে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক চলছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সরকার দাম বেঁধে দিয়েছে বলেই আলুর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।
মঙ্গলবার ইলামবাজারে বীরভূম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে আলুর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই মন্তব্য
করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “দিল্লি, পঞ্জাব-সহ কয়েকটি রাজ্যে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি
হচ্ছে। এখানে তা হয়নি। কারণ,
দামের ক্ষেত্রে সরকার সময়মতো নিয়ন্ত্রণ জারি করায় তা বাড়তে পারেনি।” মুখ্যমন্ত্রী এমন দাবি করলেও সরকার নির্ধারিত ১৩ টাকা কিলোগ্রাম দরে এ দিনও খোলা বাজারে প্রায় কোথাও আলু মেলেনি বলে ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ। আলুর জোগান নিয়ে অবশ্য কোনও অভিযোগ নেই।
বাংলার আলু সীমানা পেরিয়ে ভিন্ রাজ্যে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পাঠানোর নামে আলু পাচার হচ্ছে। একটি অসাধু চক্র আলু পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে তাঁর অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের মতো কয়েকটি
এলাকা থেকে অন্য রাজ্যে আলু পাচার হচ্ছে বলে সোমবার খবর পান মমতা। এই কাজে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেও তাঁর কাছে অভিযোগ আসে। এই প্রেক্ষিতে সোমবার রাতেই সব জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, পাচার রুখতে প্রতিটি জেলার সীমানায় মাঝরাত থেকে কাকভোর পর্যন্ত পুলিশি টহল বাড়াতে হবে।
এ দিন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ওই প্রসঙ্গে কিছু না-বললেও পাচার নিয়ে সরব ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, “সীমানায় কড়া নজর রাখুন। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আলু পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়ে যে-সব গাড়ি সীমানা পেরোচ্ছে, তাদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।” তাঁর নির্দেশ, সীমানায় ঢোকার মিনিট পনেরো আগে থেকে অনুসরণ করতে হবে আলুর গাড়িকে। দরকারে সংশ্লিষ্ট জেলার সঙ্গে কথা বলে গাড়ি ‘এসকর্ট’ করে সীমানা পার করে দিতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখন রাজ্যে যা আলু আছে, তার একটাও নষ্ট হবে না। কারণ, সাধারণ মানুষের প্রয়োজন ছাড়াও মিড-ডে মিল, সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পে প্রচুর আলু দরকার। এ বার নতুন আলু উঠতে জানুয়ারি হয়ে যাবে। তত দিন আলু মজুত রাখতেই হবে। তাই হিমঘরে আলু রাখার সময়সীমা ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে।
|