হুড়ার পরে ঝালদা-২ ব্লক। এলাকা থেকে বেআইনি মদের ঠেক অবিলম্বে উচ্ছেদ করার দাবিতে ফের পথে নামলেন মহিলারা। মঙ্গলবার এই ব্লকের হাজারেরও বেশি মহিলা এই দাবিতে কোটশিলা থানার সামনে অবস্থান করেন। পরে তাঁরা ওসি-র হাতে এই দাবিতে স্মারকলিপিও দেন। তাঁদের ক্ষোভ, এলাকায় দিনে দিনে বাড়ছে মদ্যপদের উপদ্রব। এত দিন সমস্যা ঘরের চৌহদ্দির বাইরে থাকলেও, এখন তা ঘরের চৌকাঠ ডিঙিয়েছে। প্রতিবাদ করেও ফল হচ্ছে না। পুলিশ সব জেনেও চুপচাপ। তাই বাধ্য হয়ে ঘরের মেয়ে-বউদের পথে মানতে হয়েছে।
এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ব্লক ভিত্তিক সংগঠন ‘কংসাবতী নারী মযার্দা মহাসঙ্ঘ ফেডারেশন’-এর পক্ষ থেকেই এ দিন প্রতিবাদ মিছিল হয় কোটশিলায়। কলাবতী মাহাতো, সুচিত্রা মাছুয়ার, জয়ন্তী সিংহ, জলেশ্বরী মুড়া, ফুলমণি মাহাতো, মেনকা কর্মকারদের মতো ওই সংগঠনের সদস্যদের কথায়, “মদ্যপ আর নেশাসক্তদের অত্যাচার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বাইরে নেশা করে এসে ঘরে আমাদের সদস্যদের মারধর করছে পুরুষেরা। প্রতিবাদ করলে ছেলেমেয়েদের সামনেই শুনতে হচ্ছে অকথ্য গালিগালাজ। কখনও কখনও নেশার টানে স্বামীরা জমি-জমা পর্যন্ত বেচে দিচ্ছে আমাদের অগোচরেই।” |
কলাবতী, জয়ন্তীরা বলেন, “কিছুদিন আগে আমাদের সদস্যরাই মুরগুমা এলাকায় কয়েকটি বেআইনি মদের ঠেক ভেঙে দেয়। পুলিশকে সব জানানো হয়েছিল। পুলিশ দু-এক জনকে ধরেওছিল বলে জানি। দু’চার দিন সব চুপচাপ ছিল। তার পর পরিস্থিতি আগের মতোই।” আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, যে মহিলারা প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদের শাসানো হচ্ছে। মুখের উপর অবৈধ মদ বিক্রেতারা বলে দিচ্ছে, কেউ তাদের কিছু করতে পারবে না। “তাই আজ আমরা পুলিশের কাছে এসেছি।”বলছেন আন্দোলকারীরা। প্রতিবাদী এই মহিলারা থানা থেকে সোজা যান বিডিও-র কাছে। তাঁর কাছেও মদের ঠেক উচ্ছেদের দাবি জানান তাঁরা। ঝালদা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিখা কুমার বলেন, “ওই মহিলাদের এই দাবির বিষয়টি যাতে প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখে, তার জন্য আমি প্রশাসনকে বলব।” পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “সবে বিষয়টি শুনলাম। ঘটনাটি দেখব।” জেলা আবগারি দফতরের আধিকারিক শিশিরকুমার দাসের বক্তব্য, “আমাদের দফতরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি মদের ঠেকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। অবিলম্বে ওই এলাকাতেও পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে অভিযান চালানো হবে।” |