আজ রায়বাঁধে ফের শিবির
চেক নিন, ডিভিসি নিয়ে আবেদন কমিটির
ঘুনাথপুরে ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পকে ঘিরে ফের জট কাটার লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে।
এক দিকে, প্রকল্পের অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের বোঝাতে মঙ্গলবার নিতুড়িয়া ব্লকের রায়বাঁধে সভা করল তৃণমূলের উদ্যোগে সদ্য গড়ে ওঠা ‘শিল্প উন্নয়ন কমিটি’। অন্য দিকে, অনিচ্ছুক জমি মালিকদের জন্য ফের চেক বিলি করার সিদ্ধান্ত নিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে ডিভিসি সূত্রে জানা যাচ্ছে, এ দিনই সন্ধ্যায় জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও রঘুনাথপুরের বিধায়ক সংস্থার চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে দেখা করে থমকে থাকা ‘ওয়াটার করিডর’-এর কাজ দু’দিনের মধ্যে শুরু করানোর আশ্বাস দিয়েছেন। সব মিলিয়ে থমকে থাকা প্রকল্পটিকে ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখছেন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, বুধবার রায়বাঁধ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে শিবির করে চেক বিলি করা হবে। পরে শিবির হবে গুনিয়াড়া পঞ্চায়েতে। কয়েক মাস আগেও অবশ্য এমন চেষ্টা করা হয়েছিল। সে যাত্রা চেক নিতে হাজির হননি অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের বড় অংশই। এ বার অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। কারণ, অনিচ্ছুকদের বোঝাতে মাঠে নেমেছে ‘শিল্প উন্নয়ন কমিটি’। তারই অঙ্গ হিসাবে মঙ্গলবার দুপুরে রায়বাঁধ হাটতলায় সভা করে বিক্ষুব্ধ জমি-মালিকদের সরাসরি চেক নেওয়ার আহ্বান জানান কমিটির নেতৃত্ব। সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো ও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি।
সভায় সৃষ্টিধরবাবু বলেন, “মনগ্রাম এলাকার জমি-মালিকেরা প্রকল্পে বাধা দিচ্ছে বলে শুনে সোমবার রাতে তাঁদের সঙ্গে দু’ঘণ্টা বৈঠক করেছি। ওঁরা ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। প্রশাসন চেক বিলি শেষ করলেই আমরা ডিভিসি-কে ওয়াটার করিডরের কাজ শুরু করার জন্য বলব।
রায়বাঁধে কমিটির সভায় সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো। —নিজস্ব চিত্র।
প্রয়োজনে কাজ শুরুর দিন বিধায়কের সঙ্গে নিজেও উপস্থিত থাকব।” প্রসঙ্গত, মনগ্রামের জমি-মালিকদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘জমিরক্ষা সংগ্রাম কমিটি’-র ‘সক্রিয় বাধা’য় দীর্ঘদিন ধরে ‘ওয়াটার করিডর’ নির্মাণ থমকে রয়েছে। এ দিন সৃষ্টিধরবাবুর বক্তব্যর প্রেক্ষিতে অবশ্য প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি কমিটির নেতাদের কাছ থেকে।
বস্তুত, জমি নিয়ে জটিলতার জেরে রঘুনাথপুর থেকে ডিভিসি-র প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় অন্যত্র সরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতেই তৎপরতা শুরু হয়েছিল শাসকদলের অন্দরে। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে গত সপ্তাহে বৈঠকও করেন ডিভিসি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ সেন। তাতে হাজির ছিলেন আর এক মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, রঘুনাথপুরের বিধায়ক এবং অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের প্রতিনিধি। বৈঠকের পরে শিল্পমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জট কেটে যাবে। শীঘ্রই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
এর পরেই এলাকায় ‘শিল্প উন্নয়ন কমিটি’ গড়ে ওঠে। এর মাথায় রয়েছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাই। এ দিনের সভাতেও উপস্থিত ছিলেন নিতুড়িয়া, রঘুনাথপুরের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁরা প্রত্যকেই এলাকার উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের প্রতি চেক নেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁদের বক্তব্য, “মূল প্রকল্পের জন্য এলাকার বাসিন্দারা প্রায় এক হাজার একর জমি দিয়েছেন। প্রকল্প রূপায়ণ শেষ পর্যায়ে। ফলে, সামান্য জমির জন্য অহেতুক বিরোধিতা ছেড়ে প্রকল্প রূপায়ণে এগিয়ে আসুক অনিচ্ছুক জমি-মালিকরা।” কমিটির নেতা তথা গুনিয়াড়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান গুনারাম গোপ, তৃণমূল নেতা নির্মল রাউত, রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান মদন বরাট, রঘুনাথপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রদীপ মাজি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতোদের বক্তব্য, “রঘুনাথপুরে শিল্পায়নে বিশেষ নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিছু মুষ্টিমেয় লোক জমি মালিকদের ভুল বুঝিয়ে প্রকল্প রূপায়ণে বাধা তৈরি করছে। কিন্তু তার জেরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিনিয়োগ এলাকা থেকে চলে যাবে, তা হতে দেওয়া চলবে না!” আর সভামঞ্চ থেকে বিধায়কের হুঁশিয়ারি, “কিছু মানুষ জমি মালিকদের ভুল বোঝাচ্ছেন। মানুষ প্রতিরোধ শুরু করলে আপনারাই বিপদে পড়বেন!”
এ দিন জমিরক্ষা সংগ্রাম কমিটির নাম না করেই নরমে গরমে ওই কমিটির নেতাদের ‘ওয়াটার করিডর’-এ তৈরি হওয়া অচলাবস্থা কাটানোর জন্য বলেছেন কমিটির নেতারা। বিধায়ক বলেন, “এলাকায় সেচের ব্যবস্থা ও উন্নয়ন, সমবায় করে জমি-মালিকদের ছোট ঠিকাদারির ব্যবস্থা-সহ প্রকল্পে জমিহারাদের অস্থায়ী চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছে ডিভিসি। আমরা সবসময়েই জমিহারাদের নায্য দাবির পাশে রয়েছি। কিন্তু, এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত করে নেতিবাচক আন্দোলন বরদাস্ত করা হবে না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.