প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির হটুগঞ্জ এমএনকে হাইস্কুলের অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা। কমিশনের এডিজি এলএল দঙ্গলকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়। তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের রেজিস্ট্রার রবীন্দ্রনাথ সামন্ত।
স্কুলের জনা তিরিশ শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ২৮ জন সোমবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগপত্র জমা দেন। সেখানে তাঁরা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক অরূপকুমার দে শাসক দলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের সাহায্যে নানা ভাবে তাঁদের হেনস্থা করছেন। এক শিক্ষকের ২০ বছর চাকরি হয়ে গেলেও তাঁকে বর্ধিত বেতন দিচ্ছেন না। অন্য এক শিক্ষককে বিএড পড়ার জন্য ছুটিও মঞ্জুর করছেন না। এ ছাড়াও, অরূপবাবু মিড-ডে মিলের টাকা নয়ছয় করা-সহ একাধিক অবৈধ কাজ করছেন বলেও অভিযোগে জানানো হয়েছে। কিছু শিক্ষিকাকে পরোক্ষে ‘কু-ইঙ্গিত’ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও আনা হয়েছে কমিশনের কাছে।
অভিযোগকারী শিক্ষকদের তরফে তাজিবুর রহমান বলেন, “মিড ডে মিল, ভবন নির্মাণ-সহ নানা খাতের টাকা নয়ছয় করেছেন প্রধান শিক্ষক। আমরা কয়েক জন তার প্রতিবাদ করায় বছর খানেক ধরে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।” এই অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমি সকলকে নিয়ে চলতে চাই। কিছু লোক তা করতে দিচ্ছে না।” টাকা তছরুপের অভিযোগও মানতে চাননি তিনি।
এ দিকে, বেশ কিছু দিন ধরে এই পরিস্থিতি চলায় স্কুলের লেখাপড়াও ব্যাহত হচ্ছে বলে শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ। উস্তি থানায় একাধিকবার অরূপবাবুর বিরুদ্ধে শিক্ষকেরা অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও থানা তাঁদের অভিযোগ নেয়নি বলে মানবাধিকার কমিশনে জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, প্রথমে ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর দ্বারস্থ হন। এপিডিআর কর্মীরা সোমবার ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে অভিযোগ জানাতে মানবাধিকার কমিশনে যান।
গোটা ঘটনায় শাসক দলের মদত প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রভাবিত পরিচালন সমিতির সম্পাদক আতিবুর রহমান পাইক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা বলেন, “এ সবের পিছনে সিপিএমের একটা গোষ্ঠীর মদত আছে। তারাই গোলমাল পাকাচ্ছে। যদিও ওরা আমাকে সমস্যার কথা কিছু জানায়নি।” মন্ত্রীর তোলা রাজনৈতিক ইন্ধনের অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি অভিযোগকারী শিক্ষকেরা। |