খাগড়াঘাট এলাকায় পথ দুর্ঘটনার নজির নতুন নয়। গত কয়েক দিনে ওই এলাকায় পর পর তিনটি পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন আরও এক যুবক। এ দিন, নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি সরকারি বাসের যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে ধাক্কা মারার ঘটনা সেই তালিকায় শেষ সংযোজন।
দুর্ঘটনায় মারা যান ইমাদ আলি শেখ (৫৫) নামে এক প্রৌঢ়। তারপরই তাঁর দেহ ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার লোকজন। কলাবাগান মোড় এলাকায় নিয়মিত ট্র্যাফিক ব্যবস্থা চালুর দাবি জানানো হয়। ‘বুলেভার্ড’ ও ‘স্পিড ব্রেকার’ দেওয়ার দাবিও ওঠে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “এলাকাবাসীদের দাবি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।” |
কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের উপরে খাগড়াঘাট স্টেশন মোড় পার করলেই কলাবাগান। তারপরই কয়েকটি মোড় পার করলেই হাটপাড়া। ওই এলাকায় রাস্তা দখল করে অনেকেই ধান, গম শুকোতে দেয়। ফলে সেখানে বাস চলে শ্লথগতিতে। তাই পরের বাস আস্তে চালাতে হবে এই আশঙ্কায় চালকরা খাগড়াঘাট স্টেশন থেকে কলাবাগান মোড় পর্যন্ত দ্রুতগতিতে বাস ছোটান। এ দিকে ওই এলাকা থেকে শুরু হয় ঘন জনবসতি। ওই রাস্তায় রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল। রয়েছে হাই মাদ্রাসাও। দ্রুতগতিতে ধেয়ে আসা যানের উপর অনেক সময়ই চালকরা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না। ফলে ওই এলাকায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। কলাবাগান লাগোয়া ফাঁপড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাশীনাথ দাস বলেন, “এলাকায় পথ দুর্ঘটনা কোনও নতুন ঘটনা নয়। এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরে ‘রোড ডিভাইডর’ বা ‘স্পিড ব্রেকার’ দেওয়ার দাবি করছেন। কিন্তু পুলিশ বা প্রশাসন তা কানে তুলছে না।”
গত ৪ নভেম্বর কলাবাগানের পরেই পোঠা মোড়ের কাছে লরির ধাক্কায় মারা যান রহিম শেখ (৪৫)। পোঠার পরেই চারাতলা মোড়ের কাছে সম্প্রতি একটি ছোট গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হন উদয়চাঁদপুর হাইস্কুলের ছাত্র শামসুল শেখ। বেশ কিছুদিন কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাড়ি ফিরেছে ওই পড়ুয়া। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কলাবাগানের পাশের গ্রাম আদিবাঁধার জনা কয়েক কিশোর পুজোর আগে স্থানীয় জীবন্তী বাজার থেকে জুতো কিনে লছিমনে করে ফিরছিল। দ্রুত গতির একটি গাড়ি লছিমনকে ধাক্কা মারলে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র মারা যায়। ২০০৯ সালের ৩০ জুন কলাবাগান মোড়ে বাসের ধাক্কায় মারা যান জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক স্বপন ভাদুড়ি (৬২)। এত প্রাণের বিনিময়েও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। |