|
|
|
|
পশ্চিম মেদিনীপুর |
কৃষকদের কাছে প্রকল্পের সুফল পৌঁছতে উদ্যোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পরিস্থিতির নিরিখে কৃষিতেও ‘পরিবর্তন’ আনতে উদ্যোগী হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। আর তা করতে হলে কৃষকদের আরও কাছাকাছি পৌঁছতে হবে কৃষি দফতরকে। কি ভাবে তা করা সম্ভবতা নিয়ে আলোচনা করতেই কৃষি দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে একটি কর্মশালা হল মঙ্গলবার। বৈঠকটি হয় কৃষি ভবনে। কৃষি দফতরের আধিকারিকদের পাশাপাশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তর সিংহ, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ।
বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলির মধ্যে প্রধান হল, বিকল্প চাষে কৃষকদের উৎসাহ প্রদান। দেখা যাচ্ছে, কারও দু’বিঘে জমি থাকলে তিনি শীতের মরসুমে পুরো জমিতেই আলু লাগিয়ে দিচ্ছেন বা ধানের মরসুমে ধান। কিন্তু তার পরিবর্তে কিছুটা সব্জি, ডাল শস্য লাগালে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যেত। অনেক সময়েই রোগপোকার আক্রমণ ঘটে। সেই রোগ পোকাগুলি কী? বন্ধু পোকাই বা কী? সাধারণ চাষিদের অনেকেই তা জানেন না। ফলে অকারণে কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকেন। তাই বন্ধু পোকা ও ক্ষতিকারক পোকার ছবি দিয়ে পোস্টার সাঁটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ব্লক থে কে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর এলাকায়। কোন সময় ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে, কোন রোগ পোকার জন্য কী ওষুধ, কত পরিমাণ প্রয়োগ করতে হবে তাও পোস্টারে লেখা থাকবে। যাতে চাষিরা তা থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আর চাষিদের মধ্যে এই সচেতনতা সৃষ্টি করতে ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে নিয়মিত চাষিদের নিয়ে বৈঠক করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “কৃষির উন্নয়নে দ্রুত পদক্ষেপ করা ও সঠিক রূপরেখা তৈরির জন্যই এই বৈঠক।” কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষের কথায়, “সবার আগে প্রয়োজন চাষিদের কাছাকাছি পৌঁছনো। তার জন্য নিয়মিত ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরেও বৈঠক করতে হবে। চাষিদের বোঝাতে হবে কেন নিজের প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস নিজের জমিতেই চাষ করা প্রয়োজন। সমস্যা হলে পরামর্শও দিতে হবে।” |
|
কৃষি ভবনে চলছে কর্মশালা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
কৃষি দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পও রয়েছে। কোনও সময় ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্র দেওয়া হয়, কখনও আবার মিনিকিট দেওয়া হয়। মাঝে-মধ্যে কৃষকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবিরও হয়। রয়েছে কৃষি পেনশন। বিভিন্ন প্রকল্পে উন্নত বীজ থেকে কিভাবে বেশি ফলন পাওয়া যায় তারও পরীক্ষা করানো হয় চাষিদের দিয়েই। কিন্তু দেখা যায়, প্রচারের অভাবে এই বার্তা সকলের কাছে পৌঁছনো যায় না। গুটিকয় মানুষের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ থাকে। সেই সব স্থানে অন্যান্য এলাকার কৃষকদের নিয়ে যাওয়া, সাধারণ বীজের সঙ্গে উন্নত বীজে ফলনের মধ্যে কতটা ফারাক তা হাতে কলমে দেখানোরও প্রয়োজন রয়েছে। তবেই চাষিদের উৎসাহ দেওয়া যাবে। এবার থেকে এই প্রচারের উপরেও জোর দিচ্ছে প্রশাসন। কর্মাধ্যক্ষের কথায়, “জেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির উপরেই নির্ভরশীল। তাই ফলন বাড়ানো যেমন জরুরি তেমনি বিকল্প চাষও জরুরি। জেলার মানুষের প্রয়োজনীয় ধান, আলু, সব্জি, ডাল শস্য যদি জেলাতেই উৎপাদন করা যায় তাহলে জেলার মানুষ কম খরচে তা পাবেন। তা করতে হলে সরকারি যাবতীয় প্রকল্প চাষিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। কি ভাবে তা করা হবে সেই পরিকল্পনা করতেই বৈঠক।” |
|
|
|
|
|