|
|
|
|
|
পুরভোটে ঝাড়গ্রাম |
আঁধার কাটাতে সূর্যে ভরসা সিপিএমের
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
|
দুর্দিনে রাজ্য নেতৃত্বকে পাশে চাইছেন সিপিএমের ঝাড়গ্রাম শহর নেতৃত্ব। দলের অন্দরে ঝাড়গ্রাম পুরভোটের প্রচারে শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আসার ব্যাপারে জোরদার দাবি উঠেছে। সূত্রের খবর, সিপিএমের ঝাড়গ্রাম শহর জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে জেলা নেতৃত্বের কাছে এ ব্যাপারে প্রস্তাব গিয়েছে। টানা ৩১ বছর ধরে ঝাড়গ্রাম পুরবোর্ডের থাকা বামেদের প্রধান শরিক সিপিএমের স্থানীয়-নেতা কর্মীরা বলছেন, “এই মুহূর্তে দলের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র’র ভাবমূর্তি জনমানসে যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। তাই সূর্যবাবুর মতো নেতারা পুরভোটের প্রচারে এলে লাভ হওয়ার আশা রয়েছে।” সিপিএমের ঝাড়গ্রাম শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “দলীয় কর্মীর একাংশ সূর্যবাবুকে প্রচারে নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিষয়টি দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”
আগামী ২২ নভেম্বর ঝাড়গ্রাম পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টিতে ভোট হবে (উপপুরপ্রধান প্রদীপ মৈত্র প্রয়াত হওয়ায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচন স্থগিত)। ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিতে সিপিএমের প্রার্থী এবং ৪টি ওয়ার্ডে সিপিআইয়ের প্রার্থী রয়েছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম বা সিপিআই কেউই প্রার্থী দিতে পারেনি। সেখানে বামেদের সমর্থনে দাঁড়িয়েছেন এক মহিলা নির্দল প্রার্থী। যত পুরভোট এগিয়ে আসছে, ততই বাম পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনুন্নয়নের সাঁড়াশি আক্রমণ করে চলেছেন তৃণমূলের নেতারা। সোমবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে অরণ্যশহরে পদযাত্রা ও প্রচারসভা করে গিয়েছেন। তৃণমূলের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র থেকে জেলা সভাপতি দীনেন রায়, জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, প্রদ্যোৎ ঘোষেরা কার্যত ঝাড়গ্রামে ঘাঁটি গেড়ে ওয়ার্ড-ভিত্তিক প্রচার ও জনসংযোগের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কংগ্রেস ও বিজেপির হেভিওয়েট শীর্ষ নেতারাও চলতি ও আগামী সপ্তাহে ঝাড়গ্রাম শহরে প্রচার করতে আসবেন। ঝাড়গ্রাম পুরভোটে মাত্র ৫টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। দলের ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মাহাতো জানান, বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ আগামী বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে দু’টি সভা করবেন। আগামী মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য ঝাড়গ্রামে সভা করবেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। ওই দিন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীরও ঝাড়গ্রামে আসার কথা। তবে তাঁর কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা বামেরা পাল্টা প্রচারে যেতে চাইছেন। বামফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরভোটের প্রচার করলেও এখনও কোনও সভা হয়নি ঝাড়গ্রামে। উল্লেখ্য, সিপিএমের গোষ্ঠী রাজনীতির কারণে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সূর্যবাবুর রাজনৈতিক কর্মসূচি বিশেষ দেখা যায় না। ঝাড়গ্রাম শহর জোনের দায়িত্বে রয়েছেন খোদ জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, সূর্যবাবুকে প্রচারে নিয়ে আসার বিষয়টি এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল হতে পারে। প্রথমত, সূর্যবাবু যদি প্রচারসভায় আসেন এবং বামেদের ভাল ফল হয় সেটা জেলা সিপিএমের বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হবে। সূর্যবাবু সভা করার পরও ফল ভাল না হলে, কিংবা সূর্যবাবু পুরভোটের প্রচারে আসতে অসম্মতি জানালে তখন ব্যর্থতার দায় কেবল মাত্র জেলা সিপিএমের উপর বর্তাবে না।
ঝাড়গ্রামে সিপিএমের সূর্যোদয় আদৌ হয় কি-না, সেটাই এখন অপেক্ষার বিষয়! |
|
|
|
|
|