|
|
|
|
|
আনন্দ এখন ফুরফুরে
চাপে বরং কার্লসেনই
দিব্যেন্দু বড়ুয়া |
|
গত চব্বিশ ঘণ্টায় শুনলাম, গ্যারি কাসপারভ পৌঁছনোয় চেন্নাইয়ে দাবা মহলে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথম দুটো গেম ড্র হওয়ায় দাবার বিশ্বযুদ্ধ ঘিরে উৎসাহ সামান্য হলেও কমে গিয়েছিল। কিংবদন্তি রুশ দাবাড়ু একলাফে আবার উৎসাহের পারদটা চড়িয়ে দিয়েছেন।
মাস চারেক আগেই অবশ্য কাসপারভ আমাকে উল্টো কথা বলেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় কমনওয়েলথ দাবায় বলেছিলেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সময় চেন্নাই আসবেন না। তাতে নাকি বিশ্বনাথন আনন্দের উপর চাপ বাড়বে। তার পরেও হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলালেন বোধহয় ওঁর প্রাক্তন ছাত্র ম্যাগনাস কার্লসেনকে কিছুটা সুবিধা পাইয়ে দিতে। তাতে বিশেষ লাভ হল বলে মনে হচ্ছে না। অন্তত মঙ্গলবার তৃতীয় গেমে আনন্দের খেলাতে সেটা পরিষ্কার। |
|
সেয়ানে-সেয়ানে। চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই। |
এ দিনের গেমে কর্তৃত্ব করল আনন্দই। প্রথম দুটো গেমের তুলনায় অনেক বেশি উত্তেজক খেলা দেখলাম। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই ক্রমশ ‘পিক আপ’ করছে। সাদা ঘুঁটি নিয়ে কার্লসেন রেটি ওপেনিং-ই করেছিল। প্রথম গেমের মতোই। পরে ‘রিভার্স সিসিলিয়ান ড্রাগন’-এ টার্ন নেয়। কিন্তু কালো ঘুঁটি নিয়ে খেললেও ১০ নম্বর চালের পর খেলার রাশ চলে আসে আনন্দের হাতে। ২৩ নম্বর চালে ‘রিপিটেশন অব মুভস’ করে ড্র করতে পারত আনন্দ। তা না করে নৌকোর ঘরের বোড়ে দিয়ে কার্লসেনের মন্ত্রীকে কোণঠাসা করে ফেলে। এই চালের পর মনে হচ্ছিল গেমটা আনন্দই জিতবে। কিন্তু কার্লসেন বেশ কয়েকটা ভাল ডিফেন্স করে পরিস্থিতি সামলে নেয়। যে জন্য ৫১ চালের পর গেম ড্র হয়ে যায়।
কালর্সেনের খেলায় একটা ব্যাপার আমার অবাক লেগেছে। প্রথম ২৫টা চালের মধ্যে ও মন্ত্রীরই চাল দিয়েছে সাতটা। যেটা আমরা দাবাড়ুরা সব সময় এড়িয়ে চলি। দাবার ‘গোল্ডেন রুল’ বলে গেমের শুরুর দিকে মন্ত্রীর মতো ‘হেভি পিস’-এর চাল বেশি দিতে নেই। তাতে বিপক্ষের সুবিধে হয়ে যায়। এতেই বোঝা যাচ্ছে, আনন্দ ওকে এ দিন ঠিক কতটা চাপে ফেলে দিয়েছিল। এই চাপটা পরের গেমগুলোতেও বজায় রাখতে পারলে শেষ হাসি কিন্তু আনন্দ-ই হাসবে। কাসপারভ-ও তো বলেছেন, লড়াই যদি টাইব্রেকারে যায়, তা হলে সুবিধা পাবে আনন্দই। আমি ওঁর সঙ্গে একমত।
বাইশ বছরের টগবগে কিন্তু বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অনভিজ্ঞ তরুণ কার্লসেন বারো রাউন্ডেও আনন্দকে হারাতে না পারলে টাইব্রেকারে ছটফট করবে। আর তাতে ওর ভুল করার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে। এ দিন টিভি-র সাংবাদিক বৈঠকেও ওকে দেখে কেমন যেন হতাশ লাগছিল। আর আনন্দকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী। বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে। কাসপারভ আসায় আনন্দ চাপে থাকবে আলোচনায় চেন্নাই সরগরম। আর আনন্দ মজা করে কিনা বলে দিল, “কাসপারভ এসেছেন নাকি? কই, জানি না তো!” ধন্যি, আনন্দের স্নায়ুতন্ত্র!
|
পুরনো খবর: অপ্রত্যাশিত ওপেনিংও দারুণ সামলাল আনন্দ |
|
|
|
|
|