ফের ড্র। সাদা ঘুঁটি নিয়ে দ্বিতীয় গেমে আনন্দ সুবিধে করতে না পারায় অনেকে হয়তো হতাশ। আমার মতে কিন্তু ফলটা ওর পক্ষে খুব খারাপ নয়।
এ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের নিয়ম হল প্রথম দু’ঘণ্টায় ৪০ চাল, পরের এক ঘণ্টায় ২০ চাল। এর পরেও খেলা চললে যোগ হবে আরও ১৫ মিনিট। ৬১ চালের পর প্রতি চালে ৩০ সেকেন্ড করে অতিরিক্ত। তবে ৩০ চালের আগে ড্র করা যাবে না। যদি না সেটা ‘রিপিটেশন অব মুভস’ (দু’জনে একই চাল তিনবার দিলে) হয়। যদিও প্রথম দুটো রাউন্ডেই খুব বেশিক্ষণ খেলা গড়াল না। এ দিনও যেমন ২৫ চালে ড্র হয়ে গেল।
যে ভাবে কার্লসেন শুরুতেই ‘কারোকান ডিফেন্স’-এ শুরু করল তাতে বোধহয় আনন্দ কিছুটা অবাকই হয়েছে। কেন না কার্লসেন খুব কম ব্যবহার করে এটা। গত দু’বছরের মধ্যেও কার্লসেন এই ওপেনিংটা ব্যবহার করেনি। দ্রুতই অবশ্য আনন্দ পরিস্থিতিটা সামলে নেয়। কারণ, এই ডিফেন্সের বিরুদ্ধে ওর রেকর্ড বেশ ভাল। কয়েক মাস আগেই এই ডিফেন্সের বিরুদ্ধে একটা গেম আনন্দ জিতেছিল। |
বিশ্ব দাবা উপলক্ষে মেরিনা বিচে বসেছে জাম্বো দাবা বোর্ড। ছবি: পিটিআই। |
এ দিন একটা সময় আমার মনে হয়েছিল এসপার-ওসপার হতে পারে। বিশেষ করে আনন্দ যখন ১৪ নম্বর চালে মন্ত্রীর দিকে ‘ক্যাসলিং’ করে। ডায়নামিক মুভ। ভেবেছিলাম চাপটা বজায় রাখবে। কিন্তু চার চাল পরেই ও মন্ত্রী ‘এক্সচেঞ্জ’ করায় আশ্চর্য হয়েছি। অনেকে বলছেন সেটা না করলেই হয়তো আনন্দ গেমটায় দখল রাখতে পারত। আমার মনে হয় দ্বিতীয় গেম বলেই ও বেশি ঝুঁকি নিতে চায়নি। এখনও ১০ গেম বাকি। লম্বা পথ। তাই আনন্দ হয়তো এনার্জিটা বাঁচিয়ে রাখতে চাইছে।
শুনলাম আনন্দ বলেছে ম্যাগনাস-ই ওর দেখা সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুখে তাঁর প্রায় অর্ধেক বয়সের প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে এই প্রশংসায় আমি অবশ্য অবাক হইনি। প্রতিভার পাশাপাশি এই জায়গায় পৌঁছতে কার্লসেনের কতটা পরিশ্রম রয়েছে সেটা জানি বলেই।
পারফরম্যান্সের কথা তো ছেড়েই দিলাম। সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ব্যাপারেও ও ফাঁক রাখতে চায় না। মাস্কাটের শুকনো আবহাওয়ার সঙ্গে চেন্নাইয়ের পরিবেশের মিল থাকায় ওমানের রাজধানীতে দিন কয়েক কাটিয়ে এসেছিল নরওয়ের তরুণ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাবার বোর্ডে বসে থাকতে যতটা মানসিক শক্তি লাগে, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ ফিটনেস আর স্ট্যামিনা। তাই মেডিটেশন, যোগব্যায়ামের সঙ্গে ফিটনেস বাড়াতে বিচ ভলিবল, ফুটবল, জিমেও জোর দিয়েছিল ও। চেন্নাইয়ে এসেও সরাসরি হোটেলে ওঠেনি। কিছু দিন রিসর্টে ছিল। যাতে দ্রুত শহরটার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। |
এ বার আমার ক্ষমা চাওয়ার পালা। ১২ নম্বর চালের পর ভাল পজিশনে ছিলাম। ওই পরিস্থিতিতে যেটা সঠিক মনে হয়েছে সেটাই করেছি।
বিশ্বনাথন আনন্দ |
ওপেনিং নিয়ে কিছু বলব না। তবে ১৮ নম্বর চালের পর মনে হয় ভিশি চাপ দেওয়ার চেষ্টা করতে পারত।
ম্যাগনাস কার্লসেন |
|