|
|
|
|
তেন্ডুলকরকেও ‘পিছনে’ ফেললেন চন্দ্রপল |
‘সচিনের বিদায়ী টেস্টই আমার দেড়শোতম হওয়ায় বাড়তি গর্বিত’ |
চেতন নারুলা • মুম্বই |
ওয়াংখেড়েতে এক নম্বর বক্স অফিস এ সপ্তাহে কী, বলার জন্য অবশ্যই কোনও পুরস্কার থাকার কথা নয়। সচিন তেন্ডুলকরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনের শেষ পাঁচ দিন ওয়াংখেড়ের বাইশ গজে তিন বছরের বাচ্চাও বলে দেবে। কিন্তু ওয়াংখেড়েতে আরও এক ক্রিকেটার একটা মাইলস্টোন ছুঁতে চলেছেন এবং তিনি কে, এই প্রশ্নের চটজলদি উত্তর বোধহয় খুব বেশি লোক দিতে পারবেন না। এবং স্বয়ং তিনি শিবনারায়ণ চন্দ্রপল-ও যেন নিজের সেই কীর্তিকে তেন্ডুলকরের আলোকে দেখতে চাইছেন।
“দেড়শোটা টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ কেউ রোজ রোজ পায় না। সে দিক দিয়ে আমার কাছে মুম্বই টেস্ট অবশ্যই চিরস্মরণীয়। আর আমি নিজের দেড়শোতম টেস্টে ভাল খেলার জন্যও মুখিয়ে আছি। সব ঠিক। কিন্তু সবচেয়ে বড় ব্যাপার, সচিনের বিদায়ী টেস্টটাই আমার দেড়শোতম টেস্ট হওয়ায় বাড়তি গর্ববোধ করছি,” বলছেন চন্দ্রপল। যাঁর কাছে সচিন মানে, “ওর ব্যাটিংয়ের আনন্দ বহু বছর ধরে উপভোগ করেছি। মাঠের ভেতর প্রতিপক্ষ দলের প্লেয়ার হিসাবেও ওর ব্যাটিং দেখা আনন্দের। ব্যাটিংয়ের মাস্টার সচিন। ওর মতো কিংবদন্তির থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।” |
|
ওয়াংখেড়েতে প্রথম টেস্ট খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে, সেই ১৯৯৩-এ। কুড়ি বছর পর নামছেন দু’শোতম টেস্ট খেলতে সেই ওয়াংখেড়েতেই। তবে সচিনকেও একটা ব্যাপারে ‘পিছনে’ ফেলে দিয়েছেন চন্দ্রপল। মুম্বইয়ের বয়সভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টে সচিন-পুত্রের বড় রানটান করার খবর অনেকবার পাওয়া গেলেও সচিন-অর্জুন, বাপ-বেটার কোথাও কখনও একসঙ্গে খেলার মহামুহূর্ত সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু ঊনচল্লিশ বছরের শিবনারায়ণ চন্দ্রপল আর তাঁর সতেরো বছরের ছেলে ত্যাগনারায়ণ চন্দ্রপল গত বছর গায়ানার ঘরোয়া টুর্নামেন্টের একটা ম্যাচে শুধু একসঙ্গে খেলে নজিরই গড়েননি। ট্রান্সপোর্ট স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে গাঁধী ইউথ অর্গানাইজেশনের হয়ে সেই ম্যাচে সিনিয়র আর জুনিয়র চন্দ্রপল অবিচ্ছেদ্য ২৫৬ রানের বিশাল পার্টনারশিপ খেলেছিলেন! বাবার মতোই ছেলেও বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এবং ইতিমধ্যেই জুনিয়র চন্দ্রপল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের হয়ে খেলে ফেলেছেন। যে ফর্মে সিনিয়র চন্দ্রপল ব্যাট করে চলেছেন, তাতে কি বাবা-ছেলে একসঙ্গে টেস্ট বা ওয়ান ডে খেলে ইতিহাস গড়বেন কোনও দিন? চন্দ্রপল একটু ঘুরিয়ে জবাব দিলেন, “হ্যাঁ, আমরা দু’জনে একসঙ্গে কয়েকটা ঘরোয়া ম্যাচ খেলেছি। ওকে দেশের হয়ে খেলতে দেখাটা আমার সব সময়ের স্বপ্ন।”
তার পরেই সচিনের থেকে বয়সে এক বছরের ছোট চন্দ্রপল ডুব দিলেন তেন্ডুলকর-স্মৃতিতে। “চুরানব্বইয়ে আমাদের ভারত সফরের সময় সচিনের খানিকটা ব্যাডপ্যাচ যাচ্ছিল। নিউজিল্যান্ড সিরিজে খুব বেশি রান পায়নি। তা সত্ত্বেও আমাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যাটিং করল যে, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলাররা ওর বিরুদ্ধে কোথায় বল করবে বুঝে উঠতে পারেনি। কেউ কেউ বুদ্ধি দিল, অফ স্টাম্পের একটু বেশি বাইরে করার। কিন্তু তাতে বাউন্ডারি মারতে লাগল। তার পর ওর শরীরের লাইনে বোলিং শুরু হল। সেগুলোও পত্রপাঠ বাউন্ডারিতে পাঠাল ও। এক জন পুরো ফর্মে না থাকা ব্যাটসম্যানের এ রকম ব্যাটিং অবিশ্বাস্য।”
নিজের দেড়শো টেস্ট খেলার রহস্য জানাতে গিয়ে চন্দ্রপল বললেন, “এই বয়সেও নিজেকে পুরো ফিট রাখা আর অনুশীলনে বিন্দুমাত্র হাল্কা না দেওয়াতেই এত দিন টেস্ট ক্রিকেটে টিকে আছি।” ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড হয়েও আরও উপরের দিকে না নামার ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, “তরুণ ড্যারেন ব্রাভো তিন নম্বরে ভাল করছে। চারে স্যামুয়েলসও সফল। আমি পাঁচ নম্বরে ঠিকই আছি।”
|
|
শেষ সাত বছরে টেস্টে ব্যাটিং গড় ৭০.৫৮ |
ভারতের বিরুদ্ধে ২৩ টেস্টে ব্যাটিং গড় ৬৫.৭৪ |
ভারতের মাটিতে ৬ টেস্টে ব্যাটিং গড় ৫৪.৫৫ |
|
|
|
|
|
|