|
|
|
|
স্যাটেলাইটের সাহায্যে জমি জরিপ রাজ্যে |
শালবনিতে শুরু প্রশিক্ষণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শালবনি |
স্যাটেলাইটের সাহায্য নিয়ে এ বার নতুন প্রযুক্তিতে জমি জরিপের কাজ শুরু হবে এ রাজ্যেও। তার আগে কর্মী-আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৩০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অধীন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি রয়েছে (অন্যটি মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে) সেখানেই এখন শিবির চলছে। যেখানে বিভিন্ন জেলার ৩০ জন রাজস্ব আধিকারিক-সার্ভেয়ার হাতে-কলমে নতুন প্রযুক্তিতে জমি জরিপের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আগামী দিনে বহরমপুরেও এমন শিবির হবে। রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এর ফলে অনেক কম সময়ে কাজ এগোনো সম্ভব। এখন ৫০০ একর জমির ম্যাপ তৈরি করতে যেখানে এক বছর সময় লাগে, সেখানে নতুন প্রযুক্তিতে এক মাসে ৫০০ একর জমির ম্যাপ তৈরি করা সম্ভব।” এ ক্ষেত্রে স্যাটেলাইটের সাহায্য নিয়ে ম্যাপ তৈরি করা হবে।
রাজ্যে এখন থিওডোলাইট মেশিন দিয়ে জমি জরিপের কাজ হয়। এ ক্ষেত্রে কাজ এগোতে কিছুটা বেশি সময় লাগে। নতুন প্রযুক্তিতে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) এবং ইলেকট্রনিক্স টোটাল স্টেশন (ইটিএস) দিয়ে কাজ হবে। একজোড়া জিপিএস মেশিনের দাম প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। সুইৎজারল্যান্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গের ১৮টি জেলার জন্য আপাতত ৩৬টি জিপিএস মেশিন এবং ৩৬টি ইটিএস মেশিন কেনা হয়েছে। পাশাপাশি, শালবনি এবং বহরমপুরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য ২টি জিপিএস এবং ২টি ইটিএস মেশিন কেনা হয়েছে। কেন্দ্র সরকার চাইছে, জমির নথি সংরক্ষণ এবং সমীক্ষা দু’টি কাজই নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে হোক। এর ফলে, খুব সহজে যে কোনও এলাকার জমির তথ্য মিলবে। জানা যাবে, ওই এলাকায় কত জমি রয়েছে, জমির চরিত্র কী। |
 |
শালবনিতে চলছে প্রশিক্ষণের কাজ। —নিজস্ব চিত্র। |
জমির মানচিত্র তৈরির কাজ প্রথম শুরু হয়েছিল সেই ১৯১২ সালে। তা ক্র্যাডেসটল সার্ভে (সিএস) ম্যাপ নামে পরিচিত। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৪ সালে রিভিশন্যাল সেটেলমেন্ট (আরএস) ম্যাপ তৈরির কাজ শুরু হয়। ১৯৭৪ সালের পরবর্তী সময়ে যে ম্যাপ তৈরি হয়, তা ল্যান্ড রিফর্মস (এলআর) ম্যাপ নামে পরিচিত।
এ রাজ্যে ৪ হাজার ২৪২টি মৌজা রয়েছে। ম্যাপ রয়েছে ৬৮ হাজার ৩২৮টি। কোনও মৌজার জন্য একটি ম্যাপ রয়েছে। কোনও মৌজার জন্য ৮-১০টি। সাধারণত, এক-একটি ম্যাপ ১০০ একর জমির কম হয় না। আবার ১৫ হাজার একর জমির বেশি হয় না। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়েছে ‘ন্যাশনাল ল্যান্ড রেকর্ডস মর্ডানাইজেশন প্রোগ্রাম’ (এনএলআরএমপি)-এর কাজ।
শালবনিতে প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে ৭ নভেম্বর থেকে। চলবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩০ জন কর্মী-আধিকারিককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিবির শুরু হবে ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “সব ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি আসছে। এ বার ভূমি দফতরেও নতুন প্রযুক্তিতে কাজ শুরু হবে। এর ফলে, কম সময়ের মধ্যে যে কোনও এলাকার জমি জরিপ করা যাবে।” আগামী দিনে নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের মৌজার ম্যাপ তৈরি করারও ভাবনা রয়েছে প্রশাসনের। |
|
|
 |
|
|