বাসিন্দাদের আপত্তিতে একাধিক বার আটকে গিয়েছে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির কাজ। এ বার তার ভবিষ্যৎ ঠিক করতে নাগরিক সমাজের দ্বারস্থ হতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জন্য এক দশক ধরে জমির খোঁজ চলছে ময়নাগুড়িতে। জল্পেশ, রামসাই ও খাগরাবাড়ির দারিকামারিতে ফাঁকা জমিও পাওয়া যায়। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শুরু না হতে ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দারা দূষণের আশঙ্কায় আপত্তি তোলায় ফিরে আসতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও সমরেশ রায়। বছর দেড়েক আগে জলঢাকা নদী সংলগ্ন এলাকায় অন্তত পাঁচশো একর জমি চিহ্নিত করা হয়। প্রশাসনের আশা ছিল, অনেকটাই ফাঁকা জায়গা হওয়ায় এ বার দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ উঠবে না। কিন্তু পুজোর আগে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখতে গিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি কর্তারা অস্বস্তিতে পড়েন। আশপাশের মানুষজন বেঁকে বসেন। এ বার আপত্তি ওঠে গোচারণ ভূমি নষ্টের আশঙ্কায়।
এ পরিস্থিতিতে নাগরিকদের কাছে এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের ভবিষ্যৎ জানতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। এ মাসে শেষ সপ্তাহে সম্মেলন করে তাঁরা নাগরিকের সামনে পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি সমাধানের পরামর্শও চাইবেন। প্রয়োজনে ওই সম্মেলন থেকে কমিটি তৈরি করে সমস্যার জট কাটানোর কথাও ভাবছেন তাঁরা। পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি সুভাষ বসুর কথায়, “আগে বাসিন্দাদের তরফে বাধা পেয়েও আশা ছাড়িনি। তাই নাগরিক সম্মেলন করে সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” সত্যিই কি নাগরিক সমাজ থেকে সমাধান সূত্র মিলবে? পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা জানান, নাগরিক সম্মেলন থেকে নতুন কোনও ভাবনা উঠে আসতে পারে। এ ছাড়াও নাগরিক কমিটি তৈরি করে যে এলাকায় জমি মিলেছে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানের সূত্র মিলতে পারে। প্রায় ৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই ময়নাগুড়ি শহর দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার অধীন। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় শহর এলাকায় নিয়মিত সাফাই করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই উঠেছে দূষণের অভিযোগও। বাজার থেকে রাস্তা, সর্বত্রই জমে থাকে জঞ্জালের স্তূপ। শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া জরদা নদীতেও দূষণের কারণে সমস্যা বেড়ে গিয়েছে। তাই এ বার দরকারে গোচারণের জন্য বিকল্প জমির ব্যবস্থা করে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ।
|