চার দিনের এক সদ্যোজাতের মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার বিকেলে মারা যায় শিশুটি। তারপরই সদ্যোজাতের পরিবারের লোকজন এসে হাসপাতালে তাণ্ডব শুরু করে। টেবিল উল্টে, টুল ছুড়ে তাণ্ডব চালানোর সময়ে আহত হন দুই প্রসূতিও। পুলিশ জানায় এ ব্যাপারে তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
বহরমপুরের রায়পাড়ার বাসিন্দা এক মহিলার ওই সদ্যোজাত সন্তানটি মারা যায় সোমবার। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসপাতালে ভিড় করতে থাকেন সদ্যোজাতের পরিবারের লোকজন। হাসপাতালের মাতৃসদনে ঢুকে একের পর এক টেবিল-চেয়ার উল্টে দিতে থাকেন তাঁরা বলে অবিযোগ। ‘বেবি কটে’ পর পর শোয়ানো ছিল বেশ কয়েকটি শিশু। অভিযোগ তাদের লক্ষ্য করেও ছোড়া হয় কাঠের টুল। কেনওক্রমে একটি লোহার স্ট্যান্ডে টুলটি পনে যাওয়ায় রক্ষা পায় শিশুটি। তবে আহত হন অন্তত দু’জন প্রসূতি। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামালায়। বহরমপুরের আইসি মোহাইমেনুল হক বলেন, “তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শিশু মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত করা হবে। তবে, প্রসূতির বাড়ির লোকজন যে ভাবে হাসপাতালে তাণ্ডব চালাল তা ভাবা যায় না। আমরা হামলাকারীদের নামে পুলিশের কাছে নালিশ জানিয়েছি।” পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে এক মহিলা হাসপাতালে ভর্তি হন। পর দিন সকালে অস্ত্রোপচারের পর তিনি সন্তানের জন্ম দেন। তিনি বলেন, “সোমবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে বাচ্চা ও আমি দু’জনেই ঘুমিয়ে পড়ি। বেলা তিনটে নাগাদ ঘুম থেকে উঠে দেখি বাচ্চার কোনও সাড় নেই। বিষয়টি কর্তব্যরত নার্সকে জানাই। খানিক পরে চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, বাচ্চা দেহে প্রাণ নেই।” বিকেল নাগাদ ওই প্রসূতির বাড়ির লোকজন হাসপাতালে এসে শিশু মৃত্যুর খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা লোকজন জুটিয়ে হাসপাতালে হামলা চালায়। নার্সদের বসার ঘরের চেয়ার, টেবিল ও কাচ তছনছ করা হয় বলে অভিযোগ। অঞ্জলি সরকার নামে এক নার্সকে তাক করে চেয়ার ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। অঞ্জলিদেবী আটকাতে গেলে হাতে চোট পান। তিনি বলেন, “হাসপাতালে এ ভাবে রোগীর বাড়ির পরিজনেরা হামলা চালালে আমরা কাজ করব কীভাবে?” |