কোথাও পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাজ থমকে। কোথাও বন্ধ সদ্যোজাতদের বিশেষ ইউনিটের কাজ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে এমন নানা জটিলতা রয়েছে। সেই সব সমস্যা মেটাতে ব্লক পরিদর্শনের নির্দেশ দিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। এ জন্য জেলাস্তরে পরিদর্শক দলও গঠন করা হয়েছে। দলে থাকছেন দুই উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারঙ্গি এবং নিমাই মণ্ডল, ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর গৌরীশঙ্কর দাস প্রমুখ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আজ, মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে ব্লক পরিদর্শন। চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ে বিভিন্ন মহকুমা হাসপাতাল, গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাবে পরিদর্শক দল। ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন (এনআরএইচএম) প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থে কী কী কাজ চলছে, কাজের ঠিক কী পরিস্থিতি, কাজ এগোতে কী কী সমস্যা হচ্ছে, এ সবই দেখবেন পরিদর্শকেরা। সোমবার মেদিনীপুরে বিএমওএইচদের নিয়ে এক বৈঠকে এনআরএইচএমের কাজে গতি আনার নির্দেশ দেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
কেন এই ব্লক পরিদর্শন? জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ব্লক পরিদর্শন শুরু হচ্ছে। এর ফলে, কাজেও গতি আসবে। কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, থাকলে কী ভাবে সমস্যার সমাধান সম্ভব, এ সবই খতিয়ে দেখা হবে।” জানা গিয়েছে, পরিদর্শক দলের রিপোর্ট প্রথমে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে জমা পড়বে। তিনি রিপোর্ট খতিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন। |
|
মঙ্গলবার |
খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, কেশিয়াড়ি, সাঁকরাইল। |
১৮ নভেম্বর |
কেশপুর, ডেবরা, সবং। |
২১ নভেম্বর |
বেলদা, দাঁতন-১ ও ২ ব্লক। |
২৫ নভেম্বর |
শালবনি, চন্দ্রকোনা-২, গড়বেতা- ৩। |
২৮ নভেম্বর |
গড়বেতা-১ ও ২ ব্লক। |
১২ ডিসেম্বর |
নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর-১ ও ২ ব্লক। |
|
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে ১১টি ব্লকই জঙ্গলমহলের অন্তর্গত। জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মাঝেমধ্যে নানা অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন এলাকায় ‘দুর্বল’ গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্যই কেন্দ্র এনআরএইচএম প্রকল্প চালু করেছে। বরাদ্দ অর্থে মূলত গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়। কিন্তু, অনেক সময়ই নজরদারির অভাবে কাজ এগোয় না। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত বছর জেলায় কেন্দ্রীয় দল এসেছিল। তারাও সব দেখে কাজে গতি আনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু, কোথায় কী!
এনআরএইচএমে বরাদ্দ অর্থে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে ১২টি পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি হওয়ার কথা। ৪টির কাজ শেষ। ৫টির কাজ চলছে। ৩টির কাজ সে ভাবে শুরু হয়নি। ১০ শয্যার উচ্চতর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হয়েছে ৪টি। আরও ১৩টির ঘর তৈরির কাজ সম্পূর্ণ। ৫টির কাজ চলছে। ইতিমধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল, ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে সদ্যোজাতদের জন্য এসএনসিইউ (সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট) তৈরি হয়েছে। সবমিলিয়ে ১৯টি গ্রামীণ হাসপাতাল- ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসএনএসইউ (সিক নিওনেটাল স্টেবিলাইজেশন ইউনিট) চালু হওয়ার কথা। ১৬টির ঘর তৈরির কাজ সম্পূর্ণ। বাকিগুলোর কাজ চলছে। এই সব প্রকল্পের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পরিদর্শন। এর ফলে, কাজে কতটা গতি আসে, সেটাই এখন দেখার। |