ব্যবসায়ীদের ডাকা বনধে দিনভর দুর্ভোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
আসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এনজেপি স্টেশন চত্বরের এক মহিলা ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করেছিল তৃণমূল অনুমোদিত একটি সংগঠন। কিন্তু, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই মহিলাকে ফের দোকান খোলাতে সাহায্য করে। সোমবার সকালে এনজেপি থানা এলাকার এই ঘটনার পরে পুলিশের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপে মদতের অভিযোগে এলাকায় দোকানপাট, যানবাহন বনধের ডাক দেয় তৃণমূল অনুমোদিত স্টেশন চত্বর ব্যবসায়ী সমিতি। ফলে, দিনভর স্টেশনে যাতায়াতকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অটো, রিক্শা, গাড়ি না পেয়ে যাত্রীরা স্টেশন থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে যানবাহন ধরতে বাধ্য হন। তা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। সন্ধ্যায় অবশ্য পুলিশ ওই মহিলার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে বন্ধ তুলে নেয় তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠন। |
এনজেপি স্টেশন চত্বরে বন্ধের ছবি। সোমবার।—নিজস্ব চিত্র। |
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কে সাভারি রাজকুমার বলেন, “ওই মহিলা আমাদের কাছে এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পাঠিয়ে আমরা তাঁকে তাঁর দোকান খোলানোর ব্যবস্থা করেছি। স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। সব অভিযোগই খতিয়ে দেখা হবে।”
যেখানে তৃণমূলই শাসক দল ও বনধ-এর বিরোধী, সেখানে তাদের অনুমোদিত সংগঠন এভাবে বনধ ডেকে জনজীবন বিপর্যস্ত করে কী ভাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকারের অভিযোগ, “যে দলের নেত্রী অন্য দলের বনধ সমর্থন করেন না, তাঁরই দলের লোক বনধ করছে। সরকারি দল হওয়া সত্বেও পুলিশের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেখাচ্ছে। যা খুশি তাই করছে। এতে তৃণমূলের দ্বিচারিতাই প্রকাশ পাচ্ছে।”
যদিও জীবেশবাবুর দাবি মানতে চাননি তৃণমূলের জেলা নেতা কৃষ্ণ পাল। তিনি বলেন, “যাঁরা বন্ধ করেছেন, ঘটনাচক্রে তৃণমূলের কর্মী। তবে এদিন ব্যবসায়ীদের স্বতঃস্ফূর্ত বন্ধ হয়েছে। তাতে দলের কোনও যোগ নেই। আমরা দলগতভাবে বন্ধের বিরোধী।” নিউ জলপাইগুড়ি এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আইএনটিটিইউসির জেলা সদস্য বিজন নন্দী অবশ্য বন্ধ সমর্থনের কথা স্বাকীর করেছেন। তিনি বলেন, “ওই মহিলার বিরুদ্ধে গাঁজা বিক্রি সহ নানা অসাধু ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে। এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছেন। তাঁকে অনেকবার বলা হলেও তিনি কান দেননি। তাই তাঁকে চলে যেতে বলা হয়েছে। দোকান ভাঙচুর করা হয়িন।”
ওই মহিলার এনজেপি স্টেশন চত্বরে একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। স্বামী দেড় বছর আগে মারা গিয়েছেন। দুই ছেলেকে নিয়ে দোকানেই থাকেন তিনি। ওই মহিলা পাল্টা অভিযোগ করেন, “বিজন নন্দী ও তাঁর লোকজন আমাদের উপরে মাঝে মধ্যেই আক্রমণ করে। আমাদের জোর করে তৃণমূলের সদস্য করার জন্য চাপ দিচ্ছেন তিনি। তাঁরাই গাঁজার ব্যবসা করে ও মদ ও জুয়ার আসর বসায়। যার প্রতিবাদ করায় আমাদের ওঠানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তাঁরা।” তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার রাত ৮টা নাগাদ তাঁর দোকান ভাঙচুর করে, মালপত্র গাড়িতে তুলে এলাকা ছাড়া করা হয়। এর পরে তিনি এনজেপি ফাঁড়ি ও পরে পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন। |