আরও সবুজ আর রূপটান সব শহরেই
ক্ষমতায় এসেই নগর কলকাতার সৌন্দর্যায়নে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লন্ডনের ধাঁচে নগরসজ্জার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। এ বার শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের সব শহরের সবুজায়ন ও সৌন্দর্যায়নের জন্য পুর-প্রধানদের উদ্যোগী হতে বলল মমতার সরকার। এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তার মধ্যে এই ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে প্রকল্প-প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে সব পুরসভাকে।
সোমবার কলকাতায় রাজ্যের পুর-প্রধানদের নিয়ে এক বৈঠকের শুরুতেই সৌন্দর্যায়নে জোর দেওয়ার কথা বলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শহরে সবুজ ও সৌন্দর্য বাড়াতে হলে পুরসভার কোষাগারে যে আরও টাকার দরকার, মন্ত্রীকে ঠারেঠোরে তা বুঝিয়ে দেন বেশ কয়েক জন পুর-প্রধান। টাকার অভাবে যে বহু পুরসভার অনেক প্রকল্প আটকে আছে, তা-ও জানানো হয় মন্ত্রীকে। ফিরহাদ বলেন, “সরকার কঠিন আর্থিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ঠিকই। তা সত্ত্বেও পুরসভার কাজ যাতে আটকে না-থাকে, দেখব।”
পুর উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোন কোন কাজে গুরুত্ব দিতে হবে, এ দিন পুর-প্রধানদের হাতে তার একটি নির্দেশিকা তুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতেই ছোট-বড় সব শহরের সবুজায়ন ও সৌন্দর্যায়নে জোর দিতে বলা হয়েছে। পুরসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে কোথায় কী অসুবিধা হচ্ছে, পুর-প্রধানদের তা-ও জানাতে বলা হয় এ দিনের বৈঠকে।
পুর দফতরের সচিব বি পি গোপালিকা জানান, এলাকার উন্নয়নে কী কী প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে, পুরসভাগুলি তা সরকারকে জানাক। সরকারের কাছে কী ভাবে প্রকল্প পাঠাতে হবে, এ দিন রাজ্যের দেওয়া নির্দেশিকায় তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাট, জল, আলো, জঞ্জাল সাফাই, বিভিন্ন পরিবেশ প্রকল্প তো বটেই, পুর এলাকার উন্নয়নে আর কোন কোন প্রকল্পকে গুরুত্ব দিতে হবে, সবই জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। আগামী এক মাসের মধ্যে সবিস্তার প্রকল্প-প্রস্তাব তৈরি করে পুর প্রশাসনগুলিকে তা জমা দিতে বলেন পুরমন্ত্রী। অবশ্য একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, এই ব্যাপারে জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না। এলাকার পক্ষে যা গ্রহণযোগ্য, তা ঠিকঠাক জেনেই প্রকল্প পাঠাতে হবে।
পুরমন্ত্রী বৈঠকে পুর-প্রধানদের বলেন, “শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ রাখুন। তার জন্য সরকার সব রকম সাহায্য করবে।” এ দিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যের ১২৭টি পুরসভার মেয়র, চেয়ারম্যান বা অন্য প্রতিনিধি। মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে বেশ কিছু পুর-প্রধান নানান অভাব-অভিযোগের কথা বলতে শুরু করেন। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, সৌন্দর্যায়ন জরুরি কাজ নিশ্চয়ই। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে কোত্থেকে?
আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শহরকে আলোয় সাজাতে ভালই লাগে। কিন্তু বিদ্যুতের বিল মেটানোর সামর্থ্য নেই। কলকাতা পুরসভাকে বিদ্যুতের বিল বাবদ টাকা দেয় সরকার।” অন্যান্য পুরসভাও যাতে সরকারের কাছ থেকেই বিদ্যুতের টাকা পায়, সেই আবেদন জানান তিনি। আলোর কথা তোলেন গোবরডাঙা পুরসভার চেয়ারম্যান সুভাষ দত্তও। তিনি বলেন, “কলকাতার মতো আমরাও এলাকায় ত্রিফলা আলো লাগাতে চাই। কিন্তু বিদ্যুৎ বিলের ভয়ে সাহস হয় না।”
ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুন সিংহ জানান, বি টি রোডের ধারে অনেক জায়গায় যত্রতত্র জঞ্জাল ফেলে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। এর জন্য বেশ কয়েকটি পুর-প্রশাসনকে একসঙ্গে সজাগ করতে হবে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকেই ওই কাজের দায়িত্ব নেওয়ার আবেদন জানান তিনি। কার্শিয়াঙের উপ পুর-প্রধান কল্পনা প্রধান বলেন, “আমাদের ওখানে জলের অভাব। ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া একটি জলাধার দিয়েই কোনও মতে কাজ চালাতে হচ্ছে। অবিলম্বে আরও তিনটি জলাধার তৈরি করা জরুরি।” মঞ্চে বসেই বিভাগীয় আধিকারিকদের এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন পুরমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.