|
|
|
|
একশো দিনের কাজে দুর্নীতি |
তৃণমূলের পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের অফিসে তালা মেরে দিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল সমর্থকরাই। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে নন্দকুমার ব্লকের সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে। সকাল ১০টা নাগাদ কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক ওই পঞ্চায়েত অফিসের প্রবেশপথের দরজায় তালা মেরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ফলে পঞ্চায়েতের কর্মী-আধিকারিকরা অফিসে ঢুকতে পারেননি। পরিস্থিতি দেখতে দুপুরে ওই পঞ্চায়েত অফিসে যান নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরা ও যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়ার পর পঞ্চায়েত অফিসের তালা খোলা হয়।
প্রসঙ্গত, সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১ পঞ্চায়েতটি আগেও তৃণমূলের দখলেই ছিল। বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান মানসরঞ্জন হাজরা আগের দফাতেও প্রধান ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কয়েকদিন আগে এলাকায় লিফলেট ছড়ানো হয়েছিল। এ দিন ফের তৃণমূলের একাংশ প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখানোয় অস্বস্তিতে পড়ে দলীয় নেতৃত্ব। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরা বলেন, “আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে।”
এ দিন বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া তৃণমূল নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের মতিলালচক বুথ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত। তাঁর অভিযোগ, “একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন স্থানে কংক্রিটের রাস্তা তৈরির সামগ্রী কেনার জন্য ঠিকাদারদের লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়ার মাধ্যমে খরচের হিসেব দেখানো হলেও আদতে ওই সব রাস্তার কাজ হয়নি। এরকমভাবে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। আমরা উচ্চ নেতৃত্বকে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। এই নিয়ে আলোচনার জন্য রবিবার পঞ্চায়েত অফিসের কাছে আমাদের দলীয় অফিসে বৈঠক ডাকা হলেও সেখানে প্রধান আসেননি। বাধ্য হয়ে পঞ্চায়েত অফিসে তালা মেরেছি।”
বিক্ষুব্ধরা জানান, পঞ্চায়েতের দেওয়া হিসেবে দেখা যাচ্ছে মতিলালচক গ্রামে মেচেদা-টেংরাখালি রাজ্য সড়কে ঘোড়াইসুড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে পঞ্চায়েতের সদর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ১৫০ ফুট রাস্তা পাকা কংক্রিটের করার জন্য ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা ঠিকাদারকে টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই রাস্তা এখনও পাকার কাজ শুরুই হয়নি। একই ভাবে হলদি নদীর বাঁধ থেকে ঘোলআন্দুড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা পাকার জন্য প্রায় ১ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার সামগ্রী কেনা হয়েছে। কিন্তু ওই রাস্তাও পাকা হয়নি। বিক্ষুব্ধদের মধ্যে ছিলেন তরুণ মণ্ডল নামে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যও। তিনি বলেন, “আমরা চাই কাজ না করেই যে টাকা খরচ হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে, তা ফেরতের ব্যবস্থা হোক।”
প্রধান মানস হাজরা অবশ্য বিক্ষুব্ধদের দেওয়া তথ্য ভুল দাবি করে বলেন, “আমার উপর রাগবশত দলের একাংশ সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এরা তৃণমূলের পিছিয়ে পড়া লোক। বিভিন্ন রাস্তার উন্নয়ন কাজের জন্য সামগ্রী কেনার যে হিসেব দেওয়া হয়েছে তা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। পঞ্চায়েত ভোটের বিধিনিষেধ থাকায় কাজ করা যায়নি। চলতি বছরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ওই সব রাস্তার কাজের নম্বর নথিভুক্ত করে কাজ শুরু হবে।” দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক ( উন্নয়ন) অজয় পাল তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|