|
|
|
|
পিস্তলে বিশ্বকাপ সোনা জিতে ইতিহাস হিনার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
চমকে দিলেন পাতিয়ালার পিস্তল শ্যুটার হিনা সিধু। বিশ্বকাপ শ্যুটিংয়ের ফাইনালে ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে ভারতকে প্রথম সোনা দিয়ে ইতিহাস গড়লেন তিনি।
মিউনিখে বিশ্বকাপ ফাইনালের আসরে হিনা হেলায় হারালেন বিশ্বের সেরাদের। তাঁর লড়াইটা ছিল সার্বিয়ার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জোরানা আরুনোভিচ, চিনের জোড়া অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন গুও ওয়েনজুন, লন্ডন অলিম্পিকের ব্রোঞ্জজয়ী, ইউক্রেনের ওলেনা কস্তেভিচের মতো মহাতারকাদের সঙ্গে। রবিবার শেষ হওয়া টুর্নামেন্টে যাঁদের বিরুদ্ধে নেমে প্রাথমিক রাউন্ডে ৩৮৪ পয়েন্ট তুলে তিন নম্বরে ছিলেন হিনা। কিন্তু চূড়ান্ত রাউন্ডে প্রথম দু’টো শট নড়বড়ে হলেও টানা পনেরোটা শট চাঁদমারি করে বিস্ময়কর ২০৩.৮ পয়েন্ট স্কোর করেন, যা কিনা রেকর্ড! হিনার সোনার দৌড়ের শেষে রুপোজয়ী সার্বিয়ার জোরানা আরুনোভিচের সঙ্গে তাঁর পয়েন্টের ব্যবধান দাঁড়ায় ৫.২। শ্যুটিংয়ে যা বিশাল ব্যবধান। ব্রোঞ্জ জেতেন বুলগেরিয়ার ভিকতোরিয়া চাইকা। প্রতি বছর এই শু্যটিং বিশ্বকাপ ফাইনালে অংশ নেন বিশ্বের প্রথম দশ জন শ্যুটার। এই দশ জনে থাকেন অলিম্পিক এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের পদকজয়ীরাও।
হিনার আগে ভারতের অঞ্জলি ভাগবত (২০০৩) এবং গগন নারাং (২০০৮) বিশ্বকাপ ফাইনালে সোনা জিতেছেন। কিন্তু তাঁরা দু’জনেই পদক পেয়েছিলেন এয়ার রাইফেলে। পিস্তল ইভেন্টে ভারতের হয়ে হিনাই প্রথম সোনা আনলেন। |
|
মিউনিখে সোনা জিতে হিনা বলেছেন, “এই অনুভূতিটা ঠিক কেমন বলে বোঝাতে পারব না। এর আগে দুটো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে কোয়ালিফাইং রাউন্ডের পর আমিই শীর্ষে ছিলাম। কিন্তু চূড়ান্ত লড়াইয়ে ছিটকে যাই। তাই এ বার প্রথম থেকেই দারুণ সতর্ক ছিলাম। এবং এই লড়াইটার জন্য বেশ কিছু দিন ধরে খেটেছি। খুব ভাল লাগছে শেষ পর্যন্ত আমার পরিশ্রম কাজে দিল বলে।” উচ্ছ্বসিত হিনার বাবা রাজবীর সিংহ। বলেছেন, “এই সোনাটা জিতে হিনা লন্ডন অলিম্পিকের হতাশা পুষিয়ে নিল।”
পেশায় দাঁতের ডাক্তার হিনা এ বছরই বিয়ে করেছেন প্রাক্তন আন্তর্জাতিক রাইফেল শ্যুটার রোনাক পণ্ডিতকে। এবং বলা যায়, বিয়ের পরই তাঁর এত বড় সাফল্য। আন্তর্জাতিক মঞ্চে অবশ্য হিনার এটাই প্রথম পদক নয়। ২০০৯ সালে বেজিংয়ে বিশ্বকাপে রুপো জিতেছিলেন। সেটাও কোনও ভারতীয় পিস্তল শ্যুটারের প্রথম বড় সাফল্য। এর পর ২০১০ গুয়াংঝৌ এশিয়ান গেমসে ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের দলগত রুপো। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসে দুরন্ত ফর্মে থাকা হিনা ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের পেয়ার্স-এ অনু রাজ সিংহের সঙ্গে সোনা জেতার পর ব্যক্তিগত ইভেন্টে রুপো জিতেছিলেন। লন্ডন অলিম্পিকে অবশ্য তিনি বারো নম্বরে শেষ করেছিলেন।
মজার কথা, পিস্তলে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১১ নম্বর হিনার এই বিশ্বকাপ ফাইনালে নামার কথাই ছিল না। বিশ্বের প্রথম দশে থাকা এক শ্যুটার শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ানোয় ডাক পান ভারতের মেয়ে। এবং বাকিটা ইতিহাস! |
|
|
|
|
|