খড়্গপুরে ফের তৃণমূলের কোন্দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
রেলনগরীতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল অব্যাহত। সোমবার দুপুরে খড়্গপুর পুরসভা ও নিমপুরা রেল ইয়ার্ডে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা একই সময়ে পৃথক দু’টি কর্মসূচি করলেন। এ দিন পুরসভার সামনে কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী, পুরসভার বিরোধী দলনেতা তুষার চৌধুরী। আর নিমপুরার অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। |
|
নিমপুরায় জহরলাল পাল। |
২০০৯ সালে পুর-নির্বাচনে তৃণমূল জেতার পরই কাউন্সিলর জহরবাবু ও শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিসবাবুর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। গত ৫ অগস্ট অনাস্থায় হেরে পুরসভার ক্ষমতা হারানোর ক্ষেত্রেও এই গোষ্ঠী কোন্দলই দায়ী বলে অনুমান। এ দিন সে ছবিই ফের প্রকাশ্যে আসে।
পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয় শহর তৃণমূল। দেবাশিসবাবু, তুষারবাবু ছাড়াও ছিলেন কয়েকজন কাউন্সিলর। তাঁদের অভিযোগ, কংগ্রেস পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে অসুস্থ। ফলে, পুরসভা অচল। অন্য কাউকে দায়িত্ব নেওয়ার দাবিও তোলেন তাঁরা। উপ-পুরপ্রধান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। বিরোধী দলনেতা তুষারবাবু বলেন, “পুরপ্রধান আসছেন না। এলেও ঠিকভাবে কথা বলতে পারছেন না। মানুষ এসে ফিরে যাচ্ছেন। জলপ্রকল্প থমকে। এরকম চলতে পারে না।”
একই সময়ে নিমপুরার সভায় দেখা মিলল প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল, কাউন্সিলর জয়া পাল, মহম্মদ আকবরদের মতো তৃণমূল কাউন্সিলরদের। সেখানে নিমপুরা রেল ইয়ার্ডের নিমপুরা ও হিরাডি এলাকার ৫৮ জন সুপারভাইজার-সহ কিছু শ্রমিকের হাতে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের পতাকা তুলে দেন জহরবাবু। আরামবাটি ও হিরাডিতে মিছিলও হয়। |
|
পুরসভায় শহর তৃণমূলের বিক্ষোভ। |
শহর তৃণমূলের কর্মসূচিতে গেলেন না কেন? জহরবাবুর জবাব, “ওই কর্মসূচির কথা আমাদের জানানো হয়নি। ওরা কংগ্রেস ও সিপিএম উভয়ের গালে চুমু খাচ্ছে। মাঝেমধ্যে ছায়াযুদ্ধ করছে।” দেবাশিসবাবুর অবশ্য দাবি, “দলের সব কাউন্সিলরকেই জানানো হয়েছিল।” সেই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “উনি (জহরলাল পাল) নিজে পুরসভা চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন রেল ইয়ার্ডে কিছু সিপিএমের দুষ্কৃতী সুপারভাইজার নিয়ে সভা করছেন।”
|
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
তৃণমূলের মারামারি নারায়ণগড়ে, ধৃত তিন
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারপিটে জখম হলেন দলের দুই স্থানীয় নেতা। রবিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগড় থানার পারুনিয়া হাটে এই সংঘর্ষে জখম হন তৃণমূলের ব্লক কমিটির সদস্য গৌরাঙ্গ জানা ও অঞ্চল যুব-সভাপতি তপন জানা। তাঁদের মকরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় ধৃত বরুণ বেরা, বিনয় দাস ও গোপাল সিংহ তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজত হয়েছে। তৃণমূলের জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ সূর্য অট্ট ও ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। গত জানুয়ারিতে বেলদার জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সূর্য ও মিহির ঘনিষ্ঠ নেতা কৌসর আলিকে সতর্ক করেছিলেন। তাও যে দ্বন্দ্ব মেটেনি এই সংঘর্ষই তার প্রমাণ। রবিবারের ঘটনায় ধৃতেরা সূর্য-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। আর জখমেরা মিহির ঘনিষ্ঠ। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় গৌরাঙ্গ ও তপনের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে বরুণদের। রাতেই পুলিশ তিনজনকে ঘরে। সূর্য অট্ট বলেন, “সকলে দলের ছেলে। তবে কেউ দোষ করলে তার শাস্তি পাওয়া উচিত।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের বক্তব্য, “তপন ও গৌরাঙ্গ মোটর সাইকেলে ফিরছিল। সেই সময় কারও উস্কানিতে বরুণরা ওদের মারধর করে। দলে থেকে দোষ করলে শাস্তি হবেই।” |
|