আক্রমণের মুখে আম আদমি পার্টি
রবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণে কংগ্রেস ও বিজেপি। কেজরিওয়ালের ‘আম আদমি পার্টি’-তে বিদেশি অনুদান নিয়ে এক দিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দে। অন্য দিকে দুর্নীতিকে অস্ত্র করে রাজনীতিতে নামা কেজরিওয়ালের পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত এবং বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁদের প্রশ্ন, আম আদমি পার্টি এত টাকা কোথা থেকে পাচ্ছে?
অণ্ণা হজারের অনুগামী হিসেবে প্রচারের আলোয় আসা অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নেমে কংগ্রেস এবং বিজেপি, উভয় পক্ষকেই রীতিমতো বেগ দিতে শুরু করেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব ভয় পাচ্ছে, কেজরিওয়াল কংগ্রেসেরই বেশি ক্ষতি করবেন। কারণ তাঁর প্রধান লক্ষ্য শীলা দীক্ষিতের সরকারের জনবিরোধী নীতি ও দুর্নীতি। অন্য দিকে বিজেপির আশঙ্কা, কংগ্রেস বিরোধী ভোট বিজেপি ও আম আদমি পার্টির মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যাবে। যার সুফল কুড়োবে কংগ্রেসই। আম আদমি পার্টি জানিয়েছে, ৬৩ হাজার মানুষের কাছ থেকে ১৯ কোটি টাকা চাঁদা তুলেছেন তাঁরা। কিন্তু কংগ্রেস ও বিজেপির অভিযোগ, সেই টাকা আসলে এসেছে বিদেশ থেকে।
গত মাসে একটি আবেদনের ভিত্তিতে দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে আম আদমি পার্টির অ্যাকাউন্ট ও অনুদানের উৎস খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারকে একটি রিপোর্টও পেশ করার কথা বলা হয়। সেই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই অভিযোগই উড়িয়ে দিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, “কংগ্রেস আসলে ভয় পাচ্ছে। জনমত সমীক্ষা বলছে, প্রথমবার নেমেই আমাদের ফল ভাল হবে। ওরা তদন্ত করুক। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত শেষ হোক। কিন্তু কংগ্রেস ও বিজেপির টাকার উৎসেরও তদন্ত হোক।” কেজরিওয়ালের দাবি, প্রতিটি পাইপয়সার হিসেব পার্টির ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত কেজরিওয়ালের টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “দিল্লিতে কংগ্রেস ১৫ বছর ধরে সরকার চালাচ্ছে। বিজেপিরও ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। আম আদমি পার্টির ট্র্যাক রেকর্ড কী? তাদের নীতি কী?” বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর কটাক্ষ, এক সপ্তাহ ধরে রাস্তায় ঝাঁটা (আম আদমি পার্টির নির্বাচনী প্রতীক) হাতে ঘুরে ১৯ কোটি টাকা জোগাড় করা যায় না। বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে কোনও রাজনৈতিক দল বিদেশিদের থেকে অর্থ নিতে পারে না। কোনও অনাবাসী ভারতীয়ও অর্থ দিতে চাইলে তাঁর ভারতের অ্যাকাউন্ট থেকে সেটি দিতে হবে। আর এই অর্থ লেনদেনের সময়ও কেন্দ্রীয় সরকারের নজরদারি থাকে।
বিজেপির অভিযোগ, অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁর দল চালানো ও ভোটে লড়ার জন্য এমন সব সংস্থা থেকে অর্থ পাচ্ছেন, যারা শুধু বিজেপি-বিরোধীই নয়, দেশ-বিরোধীও।
নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর জন্য তিস্তা শেতলওয়াড়কে যাঁরা অর্থ দেন, কেজরিওয়ালকেও তাঁরাই অর্থ দিচ্ছেন। দলের এক শীর্ষ নেতা এ দিন বলেন, “আমরা সমস্ত নথিপত্র জোগাড় করছি। এখনও পর্যন্ত যা তথ্য হাতে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে সিআইএ-র অর্থ সরাসরি আসছে অরবিন্দের কাছে। একটি ডাচ বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে অরবিন্দের এনজিও অর্থ পাচ্ছে। যা সামাজিক কাজের বদলে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে।”
গোড়া থেকেই বিজেপি অভিযোগ করে আসছিল, অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত করে ময়দানে নেমেছেন। অণ্ণা হজারের থেকে আলাদা হয়ে পৃথক দল গড়ার আগে কেজরিওয়াল শীলা দীক্ষিতের সাংসদ-পুত্র সন্দীপের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠকও করেছেন। এখনও কংগ্রেসের শীর্ষ এক নেতার সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ রয়েছে কেজরিওয়ালের। কংগ্রেস নেতৃত্বের লক্ষ্য, শীলা দীক্ষিতের জয় সুনিশ্চিত করার জন্য কংগ্রেস-বিরোধী ভোট অরবিন্দকে দিয়ে ভাগাভাগি করা। যাতে বিজেপির ভোট কমে, আর শীলা ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.