|
|
|
|
জমি আন্দোলন ভুলবেন না, আর্জি শুভেন্দুর
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • নন্দীগ্রাম |
আগামী প্রজন্মের কাছে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন ভুলে না যাওয়ার আর্জি জানালেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে জানালেন, ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলি চালনার ঘটনায় আদালতে সুবিচার না পেলে ‘জনতার আদালতে বিচার’ হবে দোষী অফিসারদের। শুভেন্দুর ব্যাখ্যা, ‘জনতার আদালত’ বলতে তিনি আসলে ‘জনতার রায় নিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে’র কথাই বলতে চেয়েছেন।
২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর প্রতিরোধ কমিটির মিছিলে গুলি-চালনার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে রবিবার নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের করপল্লিতে ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি সভা হয়। সেখানে সাংসদ জানান, ১৪ মার্চ ও ১০ নভেম্বরের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ভাঙাবেড়ায় ১৩০ ফুট উঁচু যে শহিদবেদি তৈরি করা হয়েছে, আগামী ৭ জানুয়ারি তার উদ্বোধন হবে। উদ্বোধন করবেন জমি আন্দোলনের পুরোভাগে থাকা রাধারানি আড়ি।
ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতা শুভেন্দুর কথায়, “কলকাতায় শহিদ মিনারের মতো এই শহিদবেদি তৈরি করা হয়েছেযাতে আগামী প্রজন্ম ভুলে না যায়, এখানে ভূমি রক্ষার জন্য আন্দোলন হয়েছিল।” শহিদবেদির দেওয়ালে থাকছে নিহতদের পাথরে খোদাই প্রতিকৃতি। এ ছাড়াও শহিদবেদি স্থলে থাকছে একটি সর্বধর্ম প্রার্থনা কক্ষ, দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র, অতিথি নিবাস। শহিদবেদির ৯৫ শতাংশ কাজই শেষ হয়ে গিয়েছে বলে সাংসদ জানান।
এ দিন সকালে তেখালি সেতু থেকে প্রথমে একটি মিছিল বেরোয়। করপল্লিতে এসে শহিদবেদিতে নেতারা একে-একে মাল্যদান করার পরে সভা শুরু হয়। হাজার তিনেক জনতাকে ১৪ মার্চের ‘মৃত্যু-মিছিলে’র কথা মনে করিয়ে দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “সেদিনের ঘটনায় জড়িত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। ১২ নভেম্বর এই নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি রয়েছে। আমরা আদালতের রায়ের দিকে নজর রেখেছি। আশা করি, সুবিচার পাব। যদি না পাই তবে আগামী ৩ জানুয়ারি ভুতার মোড়ে আমাদের সভায় দোষী পুলিশ অফিসারদের জনতার আদালতে বিচার শুরু হবে।”
নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় অভিযুক্ত সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ, অশোক গুড়িয়াদের শাস্তি হবেই দাবি করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আদালতের বিচার প্রক্রিয়া একটু সময়সাপেক্ষ। ১৯৮৪ সালে শিখ হত্যার বিচার এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাই আপনাদেরও একটু ধৈর্য ধরতে হবে।” প্রতিরোধ কমিটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “এ ক্ষেত্রে কিছু আইনগত সমস্যা আছে। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠলে মামলা প্রত্যাহার হবে। এটা সকলে জানেন, নন্দীগ্রামে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষার জন্য গ্রামবাসীরা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করেছিলেন। সাধারণ অপরাধীদের সঙ্গে তাঁদের এক ভাবে দেখা উচিত নয়।”
স্মরণসভায় কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী, খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল ছাড়াও ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির তরফে আবু তাহের, মানব বেরা, নন্দ পাত্র, ভবানীপ্রসাদ দাস, শেখ আব্দুস সামাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় নন্দীগ্রামের বিধায়ক ফিরোজা বিবি আক্ষেপের সুরে বলেন, “অনেক বন্ধুদের দেখছি, এই দিনগুলো মনে থাকে না। তখন খুব খারাপ লাগে। নন্দীগ্রামবাসীদের একটাই অনুরোধ, এই দিনগুলো যেন আমরা ভুলে না যাই!”
|
পুরনো খবর: জমি নিয়ে জালিয়াতি, সেও সেই নন্দীগ্রামে |
|
|
|
|
|