আইনের সংস্থান সম্পর্কে অবহিত না হয়েই শহরের পথে ফের দোতলা বাস নামানোর কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র জানিয়েছিলেন সে কথা। কিন্তু বাস্তবে তা করতে গিয়ে পড়তে হয়েছে আইনি বাধার মুখে। সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞায় যেহেতু ১৫ বছরের পুরনো বাস আর বাণিজ্যিক ভাবে চালানো যাবে না, তাই দোতলা বাস নামানো সম্ভব নয়, বুঝেছে সরকার। অগত্যা প্রকল্প থমকে গিয়েছে ঘোষণাতেই। এই অবস্থায় একটি দোতলা বাস কোনও মতে সারিয়ে নামানো হয়েছে চলচ্চিত্র উৎসবের প্রচারে।
২০০৮-এর ১ জুলাই হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ১৯৯৩-এর ১ জানুয়ারির আগে তৈরি সব রকম বাণিজ্যিক যান কলকাতা মেট্রোপলিটন অঞ্চলে (কেএমএ) বসিয়ে দিতে হবে। এ নিয়ে আন্দোলন-ধর্মঘটের জেরে সেই সময়সীমা পিছিয়ে যায় ২০০৯-এর ৩১ জুলাই পর্যন্ত। রায়ের প্রতিবাদে একটি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে ‘স্পেশাল লিভ পিটিশন’ করে। অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ হয় ২০০৯-এর ৩১ জুলাই। ১০ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট রায়কেই সমর্থন করে রায় দেয়। সিএসটিসি-র এমডি প্রসন্নকুমার মণ্ডল বলেন, “হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞায় পুরনো বাস মেরামতি করে বাণিজ্যিক ভাবে চালানো যাবে না।”
এখানেই আটকে গিয়েছে দোতলা বাস চালানোর ভাবনা। সিএসটিসি-র এমডি বলেন, “শহরে যে চারটি দোতলা বাস আছে, তার দু’টি একেবারেই চলবে না।” তিনি জানান, ১৯৮২ সালে তৈরি একটি বাস কোনওক্রমে সারিয়ে চলচ্চিত্র উৎসবের প্রচারে নামানো হয়েছে। এটি বহু বছর পড়ে ছিল সিএসটিসি-র গুমটিতে। ইঞ্জিন, চাকা ও অধিকাংশ যন্ত্র বদলিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করা হল।
পরিবহণমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই প্রজন্মের অধিকাংশ ছেলেমেয়েই কলকাতার প্রথম দেখবে এই বাস। এর সঙ্গে স্মৃতিমেদুরতা জড়িয়ে আছে। বিধাননগরে ওই দুই বাস চালানো হবে। পরিবহণসচিব এবং সিএসটিসি-র কর্তাদের নির্দেশও দেন। মদনবাবু বলেন, “আমার সদিচ্ছা ছিল। কলকাতার বাসযাত্রীদের আমি একটা ভাল জিনিস উপহার দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। আইনি জটিলতায় সম্ভব হয়নি।”
|