নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফের বেপরোয়া মন্তব্য করার পরেও অনুব্রত মণ্ডলের পাশেই দাঁড়ালেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় দলের বীরভূম জেলা সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন, অনুব্রতর বক্তব্যকে বিকৃত করা হচ্ছে। বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে এ দিন তীব্র আক্রমণ করলেন তিনি।
শনিবার কাটোয়ার সভায় কংগ্রেসের নাম না-করে অনুব্রতের হুমকি ছিল, “ভয় দেখালে রাতের বেলা চড়াও হব!” পরে যোগ করেছিলেন “সাধারণ মানুষ চড়াও হবে।” ঘটনার পরেই অনুব্রত পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুকুলবাবু। এই নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রবিবার মুকুলবাবু বলেন, “অনুব্রতের বক্তব্যকে বিকৃত করা হচ্ছে। ও আগে কী বলছে, তা কোথাও দেখানো হচ্ছে না! ওর সম্পূর্ণ বক্তব্য দেখানো হচ্ছে না।” এর আগে কব্জি কেটে নেওয়া নিয়ে অনুব্রতবাবু যে হুমকি দিয়েছিলেন, সে প্রসঙ্গেও তাঁর পাশে দাঁড়ান মুকুলবাবু। এ বার অনুব্রতর হুমকি প্রসঙ্গে মুকুলবাবুর মন্তব্য, “আমরা তো কোথাও এগিয়ে যাচ্ছি না! আত্মরক্ষা করছি।” অর্থাৎ অনুব্রতের হুমকিকে প্রকারান্তরে নিজেদের ঢাল হিসেবেই দেখাতে চেয়েছেন তিনি। তৃণমূলের জেলা সভাপতির হুমকি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে না-চাইলেও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, “এই ধরনের লোকজন যা বলছেন, সবই হিজ মাস্টার্স ভয়েস!”
এ দিন বুদ্ধবাবুকে সরাসরি ‘দাঙ্গাবাজ’ আখ্যা দিয়েছেন মুকুলবাবু। নরেন্দ্র মোদীর মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি-তৃণমূল আঁতাঁত নিয়ে সরব হয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। তারই জবাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া আক্রমণ করে মুকুলবাবু এ দিন বলেন, “তথ্য দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারি, কত পঞ্চায়েতে বিজেপি-র সঙ্গে সিপিএমের আঁতাঁত চলছে। নিজেরা বিজেপি-কে ছাড়া চলতে পারবে না! তাই অন্যের নামে দোষারোপ করছে!” বুদ্ধবাবুর মুখ্যমন্ত্রিত্বে নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, নেতাইয়ের ঘটনার উল্লেখ করে মুকুলবাবুর মন্তব্য, “উনি এক বারও কি এ সব ঘটনার পরে রাস্তায় নেমেছেন!” তাঁর কটাক্ষ, “রাজ্যে যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা দেখে কারও ঈর্ষা হতে পারে। তবে ঈর্ষার তো কোনও ওষুধ নেই!” মুকুলবাবুর আক্রমণের জবাবে সূর্যবাবুর প্রতিক্রিয়া, “বাজারে সব জিনিসের দাম বাড়লেও একটা জিনিসের দাম কমছে! তৃণমূল নেতৃত্ব যা বলছেন, একেবারে মূল্যহীন!”
|