মার্কোস ফালোপাকে কি ডার্বির আগেই সরিয়ে দেওয়া হবে?
ইস্টবেঙ্গলের ব্রাজিলিয়ান কোচ নিজেই কি কোচের দায়িত্ব তুলে দেবেন আর্মান্দো কোলাসোর হাতে? সম্ভাব্য কোচ হিসাবে লাল-হলুদ কর্তারা যাঁর সঙ্গে কথা অনেকখানি এগিয়ে রেখেছেন।
আর্মান্দো কি শনিবার ইস্টবেঙ্গল-আর্মি একাদশ ম্যাচ দেখতে যুবভারতীতে উপস্থিত থাকবেন? কিন্তু আর্মান্দো তো এ দিন বলে দিয়েছেন, “ইস্টবেঙ্গল আমার সঙ্গে কথা বলেছে। আমি রাজি। কিন্তু চূড়ান্ত কিছু হয়নি।”
মাত্র ছয় বা সাত ম্যাচ দেখেই কি কর্তারা কোচ পরিবর্তনে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন? মোহনবাগানের রাস্তায় হেঁটে ইস্টবেঙ্গল কি এত দ্রুত কোচ বদলাবে? যা লাল-হলুদে সাধারণত হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ ডার্বি ম্যাচের ঠিক দু’সপ্তাহ আগে এরকম অসংখ্য প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ময়দান জুড়ে। ফালোপার থাকা, না থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। শনিবার ছিল লাল-হলুদের কর্মসমিতির সভা। ক্লাব তাঁবুতে। সেখানে কোচ পরিবর্তন নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। দু’একজন সদস্য কোচের ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলেন। ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য তাঁদের বলে দেন, “কোচের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। উনি যা বলেছেন তাতে আমি সন্তুষ্ট।” সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ফুটবল সচিবই কোচের ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।
সভা থেকে বেরিয়ে নতুন কোনও কথা বলেননি ফুটবল সচিব সন্তোষবাবু। কোচের সঙ্গে শুক্রবার রাতে কথা বলার পর যা বলেছিলেন তা-ই বলে দেন। “ফালোপার উপর এখনও আস্থা রাখছি। তাকে সরানোর কথা এখনই ভাবছি না।” কিন্তু ফালোপা কি ডার্বি পর্যন্ত থাকবেন? “চান্স তো আছেই।” ফালোপাকে সরানোর ব্যাপারে যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তই হয়নি তখন আর্মান্দোর সঙ্গে কথা বলা হল কেন? সন্তোষের জবাব, “শুধু আর্মান্দো নয়, অন্তত পাঁচ জনের সঙ্গে কথা বলেছে ক্লাব। তাতে বিদেশি কোচও আছেন। মর্গ্যানের সঙ্গেও তো এখনও আমার যোগাযোগ আছে। সারা বছরই আমরা কথা বলি। যাতে সমস্যায় পড়লে নতুন কোচ আনা যায়।” আর্মান্দো কি কথা বলতে এই সপ্তাহেই কলকাতায় আসছেন? উনি কি কলকাতা লিগের ম্যাচ দেখবেন? “আমার জানা নেই। ক্লাবের যাঁরা আর্মান্দোর সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁরা বলতে পারবেন,” ধোঁয়াশা কাটাতে প্রশ্ন করা হলে বলে দেন ফুটবল সচিব। ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারও কর্মসমিতির সভার পর কোচ পরিবর্তন নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
কিন্তু ক্লাবের অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, ডার্বির আগেই ফালোপাকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। এবং সেটা গোল্ডেন হ্যান্ডশেক করেই। আলোচনা চলছে। দু’একদিনের মধ্যেই পুরো ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ফালোপা অবশ্য এ দিন সকালে চুটিয়ে অনুশীলন করিয়েছেন। তাঁকে সরানো নিয়ে যে আলোচনা চলছে তা তাঁর কানেও গিয়েছে। কিন্তু কথা বলে মনে হল এই খবর তাঁকে খুব একটা বিচলিত করেনি। ফোনে ধরা হলে বললেন, “ফুটবলে এ রকম ঘটনা ঘটেই থাকে। তবে আমি আজও অনুশীলন করিয়েছি। সোমবারও করাব। কলকাতা লিগে ভাল ফল করাই লক্ষ্য আমার। তারপর ডার্বির প্রস্তুতি নেব। ফুটবলারদের সঙ্গেও আমার কোনও সমস্যা নেই।”
আর ফালোপার জায়গায় যাঁকে নেওয়ার কথা ভাবছেন কর্তাদের একাংশ সেই আর্মান্দো দুপুর থেকে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলেন। বাইপাস অস্ত্রোপচারের পর ওষুধ খেয়ে দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকতে হয় তাঁকে। নিতে হয় বিশ্রাম। পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর কয়েক দিন আগে পুরোপুরি রিলিজ করে দিয়েছে ডেম্পো। কোলাসো ভেবেছিলেন আইএমজিআর লিগের কোনও ক্লাব পাবেন। কিন্তু টুর্নামেন্ট পিছিয়ে যাওয়ার পর এখন নতুন ক্লাবের সন্ধানে রয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাব পেয়ে তাই তিনি খুশি। আগ্রহীও।
পরিস্থিতি যা-তাতে ফালোপা বিদায় মনে হচ্ছে শুধু সময়ের অপেক্ষা।
|