দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বোলার জাতীয় কর্তব্য পালনে ব্যস্ত। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানটি ব্যস্ত চোট সারাতে। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়ে এক পয়েন্টের বেশি জোটেনি। এই বেহাল অবস্থার মধ্যেও জয়পুর থেকে অন্তত তিন পয়েন্ট নিয়ে ফেরা নিশ্চিত করে ফেললেন বাংলার ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে ৮২ রানে এগিয়ে থাকার সুবাদে এই তিন পয়েন্ট প্রায় পকেটে পুরে ফেললেন লক্ষ্মীরতন শুক্লরা।
ওপেনার রোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৭৭-এর ইনিংসের পর শনিবার পঙ্কজ সিংহ, ঋতুরাজ সিংহ ও অনিকেত চৌধুরির দুর্দান্ত পেস বোলিংয়ের সামনে রুখে দাঁড়ালেন ঋদ্ধিমান সাহা তাঁর ব্যাট থেকে আসা ৭৮ এবং শুভময় দাস (২১) ও সন্দীপন দাসের (৪৩) সঙ্গে তাঁর যথাক্রমে ৫০ ও ৫৬-র পার্টনারশিপই বাংলাকে এই তিন পয়েন্ট এনে দিল। সন্দীপন দাসও বেশ ভাল ব্যাট করছিলেন, কিন্তু নিজের ৪৩ রানের মাথায় এক শর্ট পিচড বল হুক করে ওভার বাউন্ডারি মারতে গিয়ে স্টাম্পে ব্যাট ছুঁইয়ে ফেলে হিট উইকেট হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন। ঘরের মাঠে, চেনা উইকেটে রাজস্থানের তিন আক্রমণাত্মক পেসার যে ভাবে সারাক্ষণ বাংলার ব্যাটিং লাইন আপকে চাপে রাখার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন, তা সামলানোর জন্য বড় পার্টনারশিপ দরকার ছিল।
বিশাল মাপের পার্টনারশিপ না হলেও ৯২, ৬৩, ৫০ ও ৫৬চারটি মাঝারি সাইজের পার্টনারশিপই অবস্থা সামলে দেয়। ব্যাটসম্যানদের এই লড়াইয়ে সন্তুষ্ট কোচ অশোক মলহোত্র। শনিবার রাতে জয়পুর থেকে বললেন, “ব্যাটসম্যানরা সত্যিই ভাল লড়াই করেছে। তিন পয়েন্ট মূলত ওদের জন্যই এল।”
যদিও অরিন্দম দাস (৩২), ঋদ্ধিমান ও রোহনরা একবার করে জীবন পেয়েছেন বিপক্ষের ফিল্ডারদের হাতে। ব্যাপারটাকে “সে তো ক্রিকেটেরই অঙ্গ। এই নিয়ে অভিযোগ করার কিছু নেই”, বলে হাল্কা করে দিলেন দলের ম্যানেজার সমীর দাশগুপ্ত।
রাজস্থানের পেস-ত্রয়ী ১১৪-র মধ্যে ৯৪ ওভারই করলেন এবং বলের ঝোড়ো গতি ও বাউন্সে বেশ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যান সারাক্ষণ। যেখানে বাংলার ব্যাটসম্যানরা প্রায়ই তাঁদের কাঁধের উচ্চতায় বল উঠতে দেখলেন, রাজস্থানের ব্যাটসম্যানদের কিন্তু তেমন অভিজ্ঞতার সামনে দাঁড় করাতে পারেননি অশোক দিন্দা, মনোজিৎ ঘোষ এবং অভিজ্ঞ শিব শঙ্কর পাল।
আগের ইনিংসে নিজেদের মধ্যে সাতটি উইকেট ভাগাভাগি করে নেওয়া বাংলার পেসারদের হাতেই এখন এই ম্যাচের ভাগ্য। দিন্দাদের বলে আগুন ঝরলে তবেই লক্ষ্মীরা পাঁচ পয়েন্টের জন্য ঝাঁপানোর একটা শেষ চেষ্টা করে দেখতে পারে বলে শিবিরের খবর। না হলে তিন পয়েন্টেই সন্তুষ্টি। কোচের বলা শেষ ক’টি লাইনেই সেই ইঙ্গিত। বললেন, “আমার দলের সবচেয়ে ভাল ব্যাটসম্যানের চোট, সবচেয়ে ভাল বোলার ইন্ডিয়া টিমে। বাকিরা যে লড়ল, তাতে তিন পয়েন্ট খারাপ নয়। পাঁচ পয়েন্ট এলে তা হবে বড় বোনাস।”
|