স্বস্তি দিয়ে পুরুলিয়ায় ঢুকল আলু, বান্দোয়ানে আটক ট্রাক
তিন দিন আকালের পরে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার বাজারে ঢুকল ১০ ট্রাক আলু। পুরুলিয়া শহর-সহ আদ্রা, রঘুনাথপুর, বলরামপুর, ঝালদা, মানবাজার, বরাবাজার, আনাড়া, বাঘমুণ্ডি, কাশীপুর, হুড়া ব্লকের বাজারে সেই আলু পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চাহিদার তুলনায় ওই আলুর পরিমাণ কম হলেও আলুর জোগানের খবরে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। আবার এ দিনই বান্দোয়ানের বাইপাস রাস্তা থেকে ঝাড়খণ্ডে পাচার করার সন্দেহে ১৯ ট্রাক আলু আটক করে পুলিশ।
পুরুলিয়া জেলা আলুর জন্য মূলত বাঁকুড়া ও আংশিক ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপর নির্ভরশীল। আলু নিয়ে সঙ্কট তৈরি হওয়ায় সোমবার থেকে পুরুলিয়ার বাজারে আলু কার্যত উধাও হয়ে যায়। এ নিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয় ক্রেতাদের মধ্যে। বুধবার জেলা প্রশাসন বৈঠকে বসে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ১০ ট্রাক আলু নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে। এ দিন ভোরে সেই ১২০ মেট্রিক টন আলু পুরুলিয়ায় এসে পৌঁছয়। জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “মেদিনীপুর থেকে আলু এসে গিয়েছে। বাঁকুড়া ও বর্ধমানের জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেছি। আশা করছি শুক্রবার থেকে সমস্যা মিটবে।”
পুরুলিয়ার আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা প্রবীরকুমার সেন জানান, প্রশাসনের কথা মতো এ দিন দুপুরে তাঁরা আলু কিনতে কোতুলপুরে যান। তিনি বলেন, “প্রশাসনিক সাহায্যে বাঁকুড়া থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে কমপক্ষে ১৪-১৫ ট্রাক আলু পুরুলিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা সরকার নির্ধারিত দামেই ১১ টাকা কেজি দরে ব্যবসায়ীদের আলু বিক্রি করছি। ফলে খুচরো বাজারে ১৩ টাকার মধ্যেই আলু পাবেন ক্রেতারা।”
শহরে আলু বোঝাই গাড়ি। বৃহস্পতিবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র।
এ দিন আদ্রার বাজারে দুই ট্রাক আলু ক্রেতাদের ১৩ টাকা মূল্যেই বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। তবে ঝালদায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কিছু বেশি টাকায় আলু বিক্রির অভিযোগ এসেছে। সেখানে পুরসভা আলু বিক্রিতে নজরদারির দায়িত্বে ছিল। ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার বলেন, “আমাদের কর্মীরা সরে যেতেই বেশি দামে আলু বিক্রির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এদিন ডিএম অফিসের কাছে ডিআরডিসি ভবন থেকে পুরুলিয়ার মহকুমাশাসক (পশ্চিম) নিমাইচাঁদ হালদারের উপস্থিতিতে আলু বিক্রি করা হয়। জেলা পরিষদ ভবনের কাছে আলু বিক্রির তত্ত্বাবধান করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রকাশ পাল।
বান্দোয়ানে আটক করা ১৯টি ট্রাকের মধ্যে ১৩টি ঝাড়খণ্ডে পাঠানো হচ্ছিল। বাকি ছ’টি ট্রাক পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর কথা চালানে লেখা থাকলেও অসঙ্গতি থাকায় পুলিশ তা আটক করে। ডিএসপি (ডিইবি) মহম্মদ শেখ আজম বলেন, “ঝাড়খণ্ডে পাচার করার সন্দেহে আলু ভর্তি ট্রাকগুলি আটক করা হয়েছে। জেলার অন্য জায়গায় বিক্রির উদ্দেশে যাঁরা আলু নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাদের নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।” বান্দোয়ানের বিডিও মধুসূদন মণ্ডল বলেন, “ট্রাক ভর্তি আলু নিয়ে কী করা হবে তা জেলা প্রশাসন ঠিক করবে। আপাতত সমস্ত গাড়ির কাগজপত্র খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।” এ দিন সকালে বান্দোয়ানের বাইপাস রাস্তা ধরে সারি দিয়ে আলু ভর্তি ট্রাকগুলি যেতে দেখে বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয় চেকপোস্টে গাড়িগুলি আটক করে। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িগুলি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে পাঠানো হচ্ছিল। গাড়ির চালকরা পরে থানায় আলু চালানের নথি দাখিল করলেও তাতে বেশ কিছু গরমিল নজরে পড়ে পুলিশের। ১৩টি গাড়ি জামশেদপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বাকি ছ’টি গাড়ি নিয়ে অসঙ্গতি রয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “একটি চালানে আনাড়ায় আলু পাঠানোর উল্লেখ থাকলেও এই রাস্তা দিয়ে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তার ব্যাখ্যা গাড়ির চালকরা দিতে পারেননি।” জেলা কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক দীপঙ্কর পণ্ডিত বলেন, “আটক করা আলু জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজার অথবা রেশন দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করা যেতে পারে। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারাই।”
বাঁকুড়া জেলায় এ দিন রানিবাঁধ ও হিড়বাঁধ বাদে জেলার বাকি সব ব্লকে এ দিন থেকে শিবির করে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। যদিও অনেক এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, এ দিনও কেজি প্রতি ১৬ টাকা দরেই তাঁদের খোলা বাজারে আলু কিনতে হয়েছে। শিবিরের কথাও এলাকায় ঘোষণা করা হয়নি।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.