প্রশাসনিক তদারকিতে আরামবাগ মহকুমার হিমঘরগুলি থেকে মজুত আলু বের করা হচ্ছে বুধবার সকাল থেকেই। সেই আলু কলকাতা-সহ আরও অন্য বাজারে পৌঁছচ্ছে। কিন্তু এলাকার বাজারে আলু অমিল। তা নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয় মানুষের।
বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত শুধু আরামবাগ থানা এলাকা থেকেই ১১ হাজার ১২৮ বস্তা (মহকুমার হিমঘরগুলি থেকে বেরিয়েছে প্রায় ১৫ হাজার বস্তা) বেরিয়েছে। কিন্তু আরামবাগের স্থানীয় বাজারে আলুর আকাল চলছে। যদি বা পাওয়া যাচ্ছে, দাম অনেকটাই বেশি।
মহকুমার সব থেকে সস্তার বাজারগুলির মধ্যে অন্যতম আরামবাগ পুর এলাকার সদরঘাটের পুরাতন সব্জি বাজার। এই বাজার থেকে এ দিন আলু বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকা কেজি দরে। পঞ্চায়েত এলাকার হাট-বাজারে আলুর দাম কিলো প্রতি ১৬-১৭ টাকা। স্থানীয় মানুষ হাটে বাজারে আলুর দাম শোনার পরে বেজার মুখে ওল বা কচু কিনে বাড়ি ফিরছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা দুই মহলেই প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশের নজরদারিতে বের হওয়া অত আলু যাচ্ছে কোথায়? স্থানীয় মানুষ কেন বেশি দামে আলু কিনতে বাধ্য হবেন? আরামবাগ মহকুমা কৃষি বিপণন আধিকারিক ভবেশ দাস বলেন, “অধিকাংশ আলুর গাড়ি কলকাতা যাচ্ছে। কিছু মেদিনীপুরেও যাচ্ছে।” কিন্তু আরামবাগের বাজারগুলিতে কেন আলু পৌঁছয়নি? তাঁর উত্তর, “খদ্দের মিলছে না হয় তো। কোথায় আলু যাবে, সে রকম কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।”
মহকুমাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন, কোনও ব্যবসায়ী আলু কিনতে বাধা পেলে পুলিশ তখনই ব্যবস্থা নেবে। মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “আরামবাগের বাজার হাটগুলিতে আলু সরবরাহের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” এই পরিস্থতি কাটাতে জরুরি ভিত্তিতে আজ, শুক্রবার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে মহকুমা প্রশাসনের তরফে। এ দিন আরামবাগে পুরনো সব্জি বাজারে ঘুরে দেখা গেল জনা তিরিশ ব্যবসায়ী, যাঁদের প্রতিদিন গড়ে চার বস্তা করে আলু বিক্রি হয়, তাঁদের অধিকাংশের কাছেই আলু নেই। জনা ছ’য়েক ব্যবসায়ী বস্তা দেড়েক করে আলু এনে বিক্রি করেছেন। বাজারের এক আলু ব্যবসায়ী নয়ন দত্ত বলেন, “বুধবার ৭০০ টাকা বস্তা আলু কিনে ১৬ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ দিন ৬৮০ টাকা বস্তা দরে আলু কিনে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। কিন্তু পর্যাপ্ত আলু নেই। হিমঘর থেকে যে আলু বের হচ্ছে তা বাছাই করা নয়।সেই আলু আবার খদ্দের ১৫ টাকা দরে নিতে চাইছে না।” একই কথা জানিয়েছেন মদন জানা, নিমাই নন্দী প্রমুখ ব্যবসায়ী। পাইকারি ব্যবসায়ী পরমাত্মা সাউ বলেন, “গত চার দিন ধরে আমরা আলুই পাচ্ছি না।”
|