এসে গিয়েছে। এসে গিয়েছে। বাজারে হাঁক পড়তেই সচকিত ক্রেতা থেকে বিক্রেতা সকলেই। ফের হাঁক ছাড়তেই সকলেই হুড় মুড়িয়ে পড়লেন। সঙ্কেত পেয়েই সকলেই হাতের ঝোলা নিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। প্রশাসন থেকে বলা হল একজন ক্রেতাকে ২ কেজির বেশি দেওয়া যাবে না। এভাবেই বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরহাট বাজারে তিন দিন পর দেখা মিলল আলুর।
এ দিন থেকে এলাকার বড় বাজারে সরকারি দরে আলু পাওয়া যাবে এ কথা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল। সেই মতো সকাল থেকে এলাকায় হাজির হন দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, রামপুরহাট মহকুমা কৃষি আধিকারিক-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা। মহকুমা কৃষি আধিকারিক দিবানাথ মজুমদার জানান, ২০৫ বস্তা আলু এ দিন বাজারে দেওয়া হয়েছে। ১৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার জন্য বাজারের ৫ জন পাইকারি ব্যবসায়ীকে সেই আলু দেওয়া হয়। খুচরো বিক্রেতাদের হাতে সেই আলু যাতে না যায়, সে ব্যাপারেও কঠোর নির্দেশ ছিল। |
আলু নামানো হচ্ছে রামপুরহাটের বাজারে। |
তবে সব জায়গায় আলু পৌঁছেছে এমনটা নয়। সকালে রামপুরহাট বড়বাজারে আলু মিললেও ভাঁড়শালাপাড়া বাজারে আলু পাওয়া যায়নি। মাড়গ্রামের বাজারে এ দিন আলুর দর ছিল ৭০০ টাকায় ৫০ কেজি। আবার খুচরো ক্রেতাদের ২০ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হয়েছে। মুরারই থানার রাজগ্রাম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোবিন্দলাল বিশ্বাস বলেন, “বুধবার থেকেই রাজগ্রাম বাজারে আলু অমিল। বৃহস্পতিবার সকালে আশপাশ এলাকার চাষির ঘর থেকে ২-৪ বস্তা আলু বাজারে এসেছিল, সেটা ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।” তাঁর ক্ষোভ, “শুধুমাত্র রামপুরহাট বাজারের দিকে লক্ষ্য রেখে সরকারি আলু বিক্রি করলে চলবে না। গ্রামীণ বাজারগুলিতেও সরকারি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে কি না প্রশাসনকে নজর যেমন দিতে হবে, তেমনি আলুর জোগানের ক্ষেত্রেও খামতি না হয় তার চেষ্টা সরকারকে করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, সরকার নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি করার জন্য বুধবার সিউড়ি, বোলপুর, রামপুরহাট এই তিন মহকুমায় মোট ১৪টি কাউন্টার খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। সিউড়িতে ওই দিনের বৈঠকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, হিমঘরগুলির মালিকদের সংগঠন, জেলা আলু ব্যবসায়ী সংগঠন, তিন মহকুমাশাসক এবং কৃষি, খাদ্য ও এগ্রিকালচার মার্কেটিং দফতরের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। |
১৩ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে লাইন সিউড়ির বাজারে। |
তবে শুধু রাজগ্রাম নয়, জেলা জুড়ে যেখানে আলুর জোগানে সঙ্কট সেখানে মাত্র ১৪টি কাউন্টার খুলে সরকারি দরে আলু বিক্রি করা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। জবাবে এগ্রিকালচার মার্কেটিং দপ্তরের জেলা আধিকারফিক মহম্মদ আকবর আলি বলেন, “আমদের মূল লক্ষ্য আলু নিয়ে যেখানে চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে, সেখানে প্রথম ধাপে কিছু পরিমাণ আলু পৌঁছে দিয়ে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। সে জন্য এ দিন রামপুরহাট বা সিউড়ি বাজারে যে পরিমাণ আলু হিমঘরগুলি থেকে জোগান দেওয়া হয়েছে, আজ শুক্রবার তার দ্বিগুণ পরিমাণ আলু জোগান দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “পাশাপাশি জেলার আলু অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের জন্য বাঁকুড়া থেকে শুধুমাত্র সিউড়ি বাজারের জন্য ৩০০ প্যাকেট আলু শুক্রবার সকালে জোগান দেওয়া হবে।” সরকারি দরে যাতে জেলার সর্বত্র আলু পাওয়া যায়, তার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ওই আধিকারিক।
|