যানজটের সমস্যা বেড়েই চলেছে করিমপুরে। নতিডাঙা মোড় থেকে নাটনা মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় চরম হয়রান হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রী সকলকেই। বিকল্প কোনও রাস্তা না থাকায় একমাত্র ভরসা এই রাস্তা। দুর্গাপুজোর সময় সিভিক পুলিশ ও পুজো কমিটির স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে কিছুটা সমাধান করা গিয়েছিল। কিন্তু পুজো শেষ হতেই দেখা গেল করিমপুর আছে করিমপুরেই।
যানজটের প্রধান কারণ হিসাবে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ডের অভাবকেই দায়ী করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিধান দত্ত বলেন, “স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকাটাই করিমপুরের প্রধান সমস্যা। নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ রুটের বাসগুলো দোকানের সামনে বা রাস্তার উপরেই যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকে। ওদেরও বাস রাখার কোনও আলাদা জায়গা নেই। ফলে ছোটখাটো দুর্ঘটনা, পথচলতি মানুষের ভোগান্তি করিমপুরের রোজনামচা। প্রশাসনের সঙ্গে বহু বার বৈঠক করে বাসস্ট্যান্ডের দাবি জানিয়েও সমস্যার কোনও সমাধান আজও হয়নি।” করিমপুর বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চিন্ময় বিশ্বাস বলেন, “কৃষ্ণনগর-করিমপুর রুটে প্রায় ৯০টা ও করিমপুর-বহরমপুর রুটে ৮০টা বাস প্রতিদিন যাতায়াত করে। সেই বাসগুলোর দাঁড়ানোর জন্য যে জায়গা দরকার, তাও নেই। তার ওপর বেড়েছে প্রায় ৬০টি ছোট গাড়ি। অধিকাংশ জায়গা দখল করে আছে ওই ছোট গাড়িগুলো। তাই যানজট বাড়ছে।”
|
করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের তারক সরখেল বলেন, “করিমপুর রেগুলেটেড মার্কেটের একটা অংশে বাসস্ট্যান্ড হবে বলে ঠিক হয়। সেখানে আমাদের পঞ্চায়েত থেকে বাস দাঁড়ানোর মতো ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। বাসস্ট্যান্ডের জমি নির্দিষ্ট হলে পঞ্চায়েত থেকেই পরিষেবা চালু করার মতো যতটা সম্ভব ব্যবস্থা করে দিতে পারব।”
করিমপুরের বিধায়ক সিপিএমের সমরেন্দ্রনাথ ঘোষের কথায়, “দরকার হলে আমার বিধায়ক তহবিলের এক অর্থবর্ষের পুরো টাকাও স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের কাজে দিয়ে দেব। কিন্তু কাজটা হোক।” ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চিররঞ্জন মণ্ডল অবশ্য বলেন, “করিমপুরের বাসস্ট্যান্ড এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। রেগুলেটেড মার্কেটের কৃষি দফতরের এক একর তিন শতক জমি পরিবহণ দফতরকে হস্তান্তর করার কাজ শেষ হয়ে গেছে।”
করিমপুর ১ বিডিও তাপস মুখোপাধ্যায়, “করিমপুরে স্থায়ী একটা বাসস্ট্যান্ডের ভীষণ দরকার। আমি এখানে দায়িত্বে আসার পর অনেক বার জেলাশাসকের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ইতিবাচক সাড়া পাইনি।” যানজটের মতোই দীর্ঘদিন ধরে এমন তরজা শুনতে শুনতে ক্লান্ত করিমপুরের এখন একটাই প্রশ্ন- বাসস্ট্যান্ড কী আদৌ কোনওদিন হবে? |