বাড়িতে ডাকাত পড়ার নাটক করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার মাঝ রাতে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বেলডাঙা গ্রামে ইজাজুল মোল্লা নামে ওই যুবকের বাড়িতে বোমা ফাটার শব্দ পান প্রতিবেশীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই শোনা যায় গুলির শব্দও। খানিক পর বোমা ফাটার শব্দ থেমে গেলে প্রতিবেশীরা সেই বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান, ইজাজুলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সবনুর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। ইজাজুল তাঁদের জানান, বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল। তারাই বোমা ছুড়েছে। তারপরে গুলি করে খুন করেছে তাঁর স্ত্রী-কে। ইজাজুলের কথা তখন সমর্থন করেন তাঁর দুই দাদাও।
|
পুলিশ কিন্তু ইজাজুলের সেই তত্ত্ব মানছে না। জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেছেন, “ইজাজুল তাদের বাড়িতে ডাকাত পড়ার যে কথা বলছে, তা সত্যি নয় বলেই জানতে পেরেছি। ওই যুবকই তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন, এমন অভিযোগও হয়েছে। আমরা তাই ইজাজুল ও তাঁর দুই দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকাতির নাটক করার জন্য যে বোমাগুলি ফাটানো হয়েছিল, সেগুলির তীব্রতাও ছিল খুব কম। সবনুরকে খুব কাছ থেকে দেশি বন্দুক দিয়ে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই তাই তিনি মারা যান। তবে ওই মহিলাকে কেন খুন করা হল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। ইজাজুলের শ্বশুর আইনাল শেখ অবশ্য দাবি করেছেন, “ইজাজুলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সবনুর তাতে বাধা দেওয়াতেই তাকে খুন করা হয়েছে।” পুলিশ সুপার অবশ্য বলেছেন, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একটা গণ্ডগোল ছিল। এখন ওই গণ্ডগোলের জেরেই খুন কি না, তা জানতে তদন্ত চলছে।”
বুধবার সকালে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নরম স্বভাবের মেয়ে সবনুরের এ ভাবে মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারছেন না। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে বীরভূমের মারগ্রাম থানার সন্ধ্যাজোল গ্রামের মেয়ে সবনুরের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ইজাজুলের। ইজাজুল কর্মসূত্রে মুম্বইতে থাকেন। ইজাজুল-সবনুরের ছয় ও চার বছরের দু’টি পুত্র রয়েছে। গত এপ্রিলে ইজাজুল মুম্বই থেকে বাড়ি এসেছিলেন। তখন দিন পনেরো থাকার পরে চলে যান। গত রবিবার ফের বাড়ি ফেরেন। প্রতিবেশীরা জানান, প্রথম দিকে ইজাজুল-সবনুরকে সুখী দম্পতি বলেই মনে হত তাঁদের। তবে বছর দেড়েক ধরে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি হতো। |