পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন এলাকার ভোটার না-হওয়া সত্ত্বেও রেজিনগরে গিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করেছিলেন তিনি। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে কমিশনে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের নালিশ জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর। অভিযোগ খতিয়ে দেখে কমিশন অধীরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭১-এফ ধারায় অভিযোগ দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। আদালতের নির্দেশ ছিল রেল প্রতিমন্ত্রীকে আদালতে এসে জামিন নিতে হবে। রেল মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন কাজে ‘ব্যস্ত’ থাকায় এত দিন আসতে পারেননি মন্ত্রী। বুধবার বহরমপুরের বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির হয়ে সেই জামিনেরই আবেদন করেন মন্ত্রী। বিচারবিভাগীয় আদালতের বিচারক সুতীর্থ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে এ দিন জামিনে মুক্তিও দেন।
শুধু নির্বাচনী বিধিভঙ্গে অভিযোগই নয়। ২০০৭ সালের অন্য একটি মামলাতেও বুধবার জামিন পেলেন অধীর। মন্ত্রীর আইনজীবী পীযূষ ঘোষ বলেন, “২০০৭ সালে বহরমপুরের একটি হাসপাতালের একটি গণ্ডগোলের ঘটনাতেও জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল আমার মক্কেলকে। সে মামলাতেও এ দিন জামিন পেয়েছেন তিনি।” গত জুলাই মাসে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন রেজিনগর এলাকায় গিয়েছিলেন অধীর। কিন্তু ওই এলাকার ভোটার নন তিনি। বুমায়ুনের অভিযোগ ছিল, মন্ত্রী হয়ে ওই এলাকায় ভোটারদের উপরে নিজের প্রভাব খাটাতেই রেজিনগরে গিয়েছিলেন অধীর। পরের দিনই এ ব্যাপারে কমিশনে নালিশ জানান তিনি। পীযুষবাবু বলেন, “নির্বাচন বিধিভঙ্গের মামলার পরবর্তী দিন ঘোষণা হয়েছে ২০ নভেম্বর।” |
তিনি বলেন, “কমিশনের দায়ের করা ওই মামলায় আদালত ৩ অগস্ট অধীরের নামে সমন জারি করে জানায়, ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে হবে। কিন্তু সেই সময়ে তিনি দিল্লিতে রেলমন্ত্রকের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। ১৬ সেপ্টেম্বর মক্কেলকে আদালতে হাজির করানোর জন্য বিচারকের কাছে সময়ে চেয়ে আবেদন করেছিলাম। বিচারক ওই আবেদন মেনে ২০ নভেম্বরের মধ্যে মন্ত্রীকে হাজির হওয়ার জন্য সময় দেন। এ দিন সেই মামলাতেই হাজিরা দিয়ে জামিন পেলেন অধীর।”
এ দু’টি মামলাতে জামিন পেলেও বহরমপুরে জেলাশাসকের বাংলো ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত অধীর জামিনের জন্য জেলা জজ আদালতে আবেদন করেছেন। গত ২৫ অক্টোবর ওই আদালতের দায়রা বিচারক পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে অন্তর্বর্তীকালিন জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সেই মত এ দিন সিজেএম আদালতের বিচারক অলি বিশ্বাসের এজলাসে হাজির হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।” এ দিন বেলা দু’টো নাগাদ সাদা ফুল হাত জামা ও নস্যি রংয়ের চেনা ফুল প্যান্টে আদালত চত্বরে পৌঁছন অধীর। গাড়ি থেকে নেমেই তিনি সোজা সিজেএমের এজলাসে ঢুকে যান। সেখানে তাঁকে চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়। বিচারক অলি বিশ্বাস তাঁর নাম ধরে ডাকতেই তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। এর পরেই সিজেএমের এজলাস ছেড়ে তিনি যান প্রথম বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে। সেখান থেকেই বেরিয়েই গাড়িতে আদালত চত্বর ছেড়ে যান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ দিন কোনও মন্তব্যও করতে চাননি তিনি।
|