মাদার ডেয়ারির বিভিন্ন বুথ থেকে সব্জি বিক্রির চেষ্টায় ফের উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন দিল্লির মতো কলকাতাতেও দুধের বুথ থেকে সব্জি বিক্রি হোক। তাঁর নির্দেশমাফিক গত বছর বাংলা নববর্ষ অর্থাৎ ২০১২-র ১৪ এপ্রিল থেকে শহরের বেশ কিছু বুথে সরকারি উদ্যোগে শুরু হয় সব্জি বিক্রি। পরিকাঠামো তৈরির জন্য বেশ কিছু অর্থ খরচও হয়। কিন্তু গোটা ব্যাপারের অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে। মুশকিল আসানের পথ খুঁজতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অফিসারদের সঙ্গে শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি পরামর্শদাতা প্রদীপ মজুমদার।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি আনাজপাতি কিনে মাদার ডেয়ারির বুথ থেকে বিক্রি করানো গেলে ক্রেতার সঙ্গে চাষি এবং সরকারি দুগ্ধনিগম উপকার পাবেন। কেন পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ল? মাদার ডেয়ারির মুখ্য বিপণন ম্যানেজার সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় বলেন, “আনাজপাতি সরবরাহের কথা রাজ্যের কৃষি দফতরের। ওরা যদি তা না পারে, আমরা কী করে বুথে বুথে খদ্দেরদের বিক্রি করব?” তাঁর দাবি, সল্টলেকে মাদার ডেয়ারির বিভিন্ন বুথে কিন্তু এই সব্জি বিক্রি চলছে। |
দেড় বছর আগে মাদার ডেয়ারির ২৫টি বুথ থেকে সব্জি বিক্রি শুরু হয়। কয়েক মাস বাদে ডেয়ারির আরও ২৫টি বুথে শুরু হয় এই পরিষেবা। কেন তাতে ভাঁটা পড়ল? কৃষি দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “সব্জি সংগ্রহের জন্য আমরা চাষিদের বেশ কিছু সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু সংগৃহিত সব্জি বুথে বুথে পাঠানোর দায়িত্ব কৃষি বিপণন দফতরের। তাদের যথেষ্ঠ পরিকাঠামো না থাকায় এই অবস্থা।” কৃষি বিপণন দফতরের এক অফিসার বলেন, “আমাদের পাশাপাশি উদ্যানপালন দফতরকেও চাষিদের কাছ থেকে সব্জি সংগ্রহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর জন্য সমন্বয়ের কিছু সমস্যা হয়।”
মাঠের সব্জি বুথে পাঠাতে মাদার ডেয়ারির জন্য ৬টি বাতানুকূল ভ্যান বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। আরও ২০টি ভ্যানের বরাত দেওয়া হয় ভিন্ রাজ্যের সংস্থার কাছে। সেগুলি হাতে পাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হয়ে এ সবের অর্থ বরাদ্দ করান। উদ্যানপালন দফতর থেকে বরাদ্দ করা হয় বেশ কিছু ঠেলাভ্যান। এ কথা স্বীকার করে প্রদীপ মজুমদার বলেন, “প্রকল্পটিকে ফলপ্রসূ করতে শীঘ্রই বৈঠক ডাকা হবে।”
একাধিক সরকারি বিভাগ এক কাজ করলে সমন্বয়ের কিছু সমস্যা হতে পারে, এ কথা জানিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম গোটা প্রক্রিয়াটি মাদার ডেয়ারি নিজেরাই করুক। কিন্তু রুগ্ণ কিছু দুগ্ধ প্রকল্পকে চাঙ্গা করা এবং সংশ্লিষ্ট নানা কাজে তারা ব্যস্ত থাকায় অত বড় দায়িত্ব নিতে পারেনি।” এই সঙ্গে জানান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে সব্জির জোগানবৃদ্ধির বিষয়টি প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে। |