ডি পি এলের হাল ফেরাতে উদ্বৃত্ত জমি নিলাম করবে রাজ্য
থ দেখিয়েছে পরিবহণ দফতর। শিল্প দফতরের পরিকল্পনারও অন্তর্গত। রাজ্য সরকারি সূত্রে খবর, এ বার উদ্বৃত্ত জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অর্থ সংস্থানের পথ খুঁজছে বিদ্যুৎ দফতরও।
১৯৬১ সালে তৈরি দুর্গাপুর প্রোজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)-এর বাড়তি জমি নিলাম করে সংস্থার সম্প্রসারণ ও পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে চায় রাজ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পরামর্শদাতা সংস্থা বাছাই করে প্রাথমিক সমীক্ষা ও রোডম্যাপ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই তাদের খসড়া পরিকল্পনা জমা দেওয়ার কথা।
বেশ কয়েক বছর ধরেই সংস্থার আর্থিক অবস্থা বেহাল। গত অর্থবর্ষে ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। সংস্থার ঘাড়ে ঋণের বোঝাও কম নয়। পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন বা বিদ্যুৎ বিত্ত নিগমের থেকে ২৫০০ কোটি টাকা ঋণও নেয় সংস্থা। মোট ৬৪১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ডি পি এল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, ৩৫০০ কর্মীর সংস্থা চাঙ্গা করতে অর্থ বরাদ্দ করা রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয়। রফাসূত্র হিসেবে তাই সংস্থার নিজস্ব সম্পত্তি কাজে লাগানোর দিকেই নজর দিচ্ছে তারা।
কলকাতা থেকে দুর্গাপুর যেতে রেল লাইনের ডান দিকে ৪০০ একর জমিতে পড়বে সংস্থার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও শ্রমিক আবাসন। আর বাঁ দিকে ৯৫০ একর জমিতে অফিসারদের আবাসন, মুরগি খামার, শালবন, আমবন, বন্ধ হয়ে যাওয়া এক কারখানা, স্কুল, জলের পাইপলাইন ও বিদ্যুতের লাইন রয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, স্বয়ংসম্পূর্ণ উপনগরী গড়তে আগ্রহী সংস্থার জন্য জমি নিলাম করা হবে। তবে এক সঙ্গে সমস্ত ফাঁকা জমি নিলাম হবে না। ধাপে ধাপে তা করা হবে। সেই মতো পরামর্শদাতা সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রাথমিক পর্বে কোথায় কতটা জমি খালি, তার বিশদ বিবরণ জানাতে। ফ্রি ল্যান্ড বা যে-জমি এখনই বিক্রয়যোগ্য, তা-ই প্রথম পর্বে নিলাম করা হবে।
সরকারি এক কর্তার দাবি, শুধুই জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার সংস্থার লক্ষ্য নয়। একই সঙ্গে প্রায় ভেঙে পড়া কর্মী আবাসন নতুন করে তৈরির দিকেও নজর দিচ্ছে তারা। তিনি জানান, প্রকল্পকে দু’টি জোন (‘এ’ এবং ‘বি’) বা এলাকায় ভাগ করা হয়েছে। জোন এ-র আবাসনগুলির অবস্থা বেশ খারাপ। এখানে লোকসংখ্যাও কম। জোন বি-তে রয়েছে তুলনামূলক নতুন ও উন্নত আবাসন। সেখানে বহুতল তৈরি করে জোন এ-র আবাসিকদের পুনর্বাসন করা যেতে পারে। এর ফলেও কিছু জমি হাতে পাওয়া যাবে বলে মনে করছে সরকারি মহল।
সম্পূর্ণ প্রকল্প তৈরির সময়সীমা ১০ বছর। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এক কর্তা জানান, জমি নিলামের সঙ্গে দু’টি বিষয় জড়িয়ে আছে: উপনগরী গড়ার পরিকল্পনা ও কর্মী আবাসন নির্মাণ। সেই সূত্রে দু’টি পথ খোলা। এক, যে-সংস্থা জমি কিনে উপনগরী তৈরি করবে, সেই সংস্থাই আবাসন গড়ে দেবে। সে ভাবেই জমির দাম ধার্য করা হবে। দুই, ডিপিএল নিজেই আবাসন তৈরির দায়িত্ব নেবে। পৃথক ভাবে ফাঁকা জমি বিক্রি করা হবে। এই দ্বিতীয় পথই সুবিধাজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বহিরাগত সংস্থার উপর আস্থা রেখে আবাসন খালি করতে চান না বাসিন্দারা। সে ক্ষেত্রে কর্মীদের পক্ষে নিজেদের সংস্থার উপর ভরসা রাখা তুলনায় সহজ কাজ। যদিও আবাসন তৈরির প্রয়োজনীয় অর্থের জন্য জমি নিলামের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে সংস্থাকে।
আর্থিক টানাটানিতে জেরবার রাজ্য রুগ্ণ সংস্থার নিত্য খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে। সমাধানসূত্র হিসেবে উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করে কোষাগারে অর্থ জোগানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে পরিবহণ দফতর। ৫টি পরিবহণ নিগমের বাড়তি জমি বিক্রির জন্য দরপত্র চেয়েছে রাজ্য। একই পরিকল্পনা নিয়েছে শিল্প দফতরও। ন্যাশনাল আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি (নিস্কো), লিলি বিস্কুট, নিও পাইপস ও ইলেকট্রো মেডিক্যাল অ্যান্ড অ্যালায়েড ইনডাসট্রিজকে একটি পরিচালন কর্তৃপক্ষের আওতায় এনে সংস্থাগুলির উদ্বৃত্ত জমি ও সম্পত্তি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করতে চাইছে রাজ্য। যদিও কয়েকটি সংস্থার কর্মীরা বিরোধিতা করছেন। তবে সরকারি কর্তাদের মতে, ডিপিএল-এর ক্ষেত্রে এই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সংস্থার সম্প্রসারণের বিষয়টিও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.