মিউচুয়াল ফান্ড
দাঁড়িপাল্লায় লগ্নি
ড়তা কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ার বাজার। বহু ইক্যুইটি (শেয়ার নির্ভর) ফান্ডের মূল্যই বেড়েছে। আর এই অবস্থায় লগ্নিকারীদের সামনে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে একটাই প্রশ্ন। কোন ফান্ড কত ভাল ফল করতে পারে, তা মাপব কী করে? কী করে ঝুলিতে পুরব বাজারের সেরা ফান্ডটি? চলুন উত্তরটা খুঁজি।
ভাল মুনাফা ও ঝুঁকির শর্ত
বাজারে অগুনতি ফান্ডের মধ্যে থেকে একটি-দু’টিকে বেছে নেওয়া বেশ শক্ত কাজ। সকলেই চান সেরাটি কিনতে। অর্থাৎ সেই মরসুমে যে-ফান্ড সব থেকে বেশি রিটার্ন দিচ্ছে, সেটিই। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ে খুব বাস্তবসম্মত ভাবে রিটার্ন দেওয়ার প্রকৃত ক্ষমতা খতিয়ে দেখা হয় না। যাচাই করা হয় না ঝুঁকির দিকগুলিও। অথচ যে-ফান্ড বেশি রিটার্ন দিচ্ছে, তার ঝুঁকিও বেশি হতে পারে। আর সকলের ঝুঁকি বইবার ক্ষমতা সমান হয় না। তাই কেনার আগে ফান্ডের পারফর্ম্যান্স বিচারের সময়ে কিছু কথা মনে রাখুন
১) ইক্যুইটি নির্ভর ফান্ডের তহবিল খাটে নানা ধরনের শেয়ারে। তাই এই লগ্নি যথেষ্ট ঝুঁকির।
২) ঝুঁকির বহর ফান্ডের চরিত্র অনুযায়ী আলাদা। কোনওটির একটু বেশি। কোনওটির কম।

ফান্ড বিচারের হাতিয়ার
একটা বিষয় তা হলে খুব পরিষ্কার। রিটার্নের সঙ্গে সঙ্গে ফান্ডের ঝুঁকির দিকটি যাচাই করে দেখাও খুব জরুরি। আর এখানেই উঠে আসে ফান্ডের পারফর্ম্যান্স বিচারের দুই মাপকাঠি। ক) বিটা ও খ) স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন।

বিটা
বিটা বলে দেয়, কোনও শেয়ার কতটা তালে তাল মেলাচ্ছে বাজারের (সেনসেক্স, নিফটির মতো বিভিন্ন সূচক যার মাপকাঠি) সঙ্গে। অর্থাৎ এর থেকে সূচক বা বাজারের পরিপ্রক্ষিতে কোনও সংস্থার শেয়ার দরের ওঠা-নামা মেপে নেওয়া যায়। ফলে বিটা দেখে আন্দাজ করা যায় সাধারণ ভাবে বাজারের সামগ্রিক রিটার্নের তুলনায় কোনও শেয়ার (বা ফান্ড তহবিল) কতখানি বেশি বা কম লাভ দিতে পারে। ঝুঁকিই বা কতটা।
যে শেয়ারের বিটা ১: এর মানে বাজার যে-ভাবে উঠবে বা নামবে, ঠিক সেই ভাবে উঠবে বা নামবে শেয়ারটির দর। এখানে ঝুঁকি ও রিটার্ন মোটামুটি।
যে শেয়ারের বিটা ১-এর কম:এর মানে শেয়ারটি চলবে সূচকের পিছু পিছু। বাজারের ওঠা-নামার তুলনায় সেটির ওঠা-নামা কম হবে। এখানে ঝুঁকি কম। রিটার্নও কম হতে পারে।
যে শেয়ারের বিটা ১-এর বেশি: এ ক্ষেত্রে শেয়ারটি দৌড়বে সূচকের আগে। অর্থাৎ তার দামের ওঠা-পড়া সামগ্রিক ভাবে বাজারের ওঠা-পড়ার থেকে বেশি হবে। এখানে ঝুঁকি বেশি। তবে রিটার্নও বেশি হওয়ার সুযোগ আছে।
স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন
এটি দেখায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনও ফান্ড তার গড় রিটার্নের থেকে কতটা উপরে উঠছে বা নামছে। ফান্ডটির দাম বাড়া-কমার অস্থিরতা ধরা পড়ে এতে। বোঝা যায় দাম ওঠা-কমার প্রবণতাও।
স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন যখন শূন্য: ধরুন, গত ৩ বছর ধরে একটি ফান্ডের মূল্য মাসে ১% করে বাড়ছে। তা হলে তার স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন শূন্য। কারণ মাসে মাসে মূল্যের বদল হচ্ছে না। এতে রিটার্ন বেশি হবে না। যদিও ঝুঁকি কম।
স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন যখন বেশি: ধরা যাক, এক মাসে ফান্ডের মূল্য বাড়ল ৮%। পরের মাসে ২০%। তার পরের মাসে কমলো ১০%। অর্থাৎ প্রতি মাসে তার মূল্য বদলাচ্ছে। এ ফান্ডের স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন বেশি। এটি বেশি রিটার্ন দিতে পারে। তবে ঝুঁকিও বেশি। কিন্তু মাথায় রাখবেন, দীর্ঘ দিন ধরে ফান্ড হুড়মুড়িয়ে পড়তে থাকলেও স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন বেশি দেখায়। কাজেই শুধু এই শর্তটি দেখে ফান্ড না কেনাই ভাল।
শর্ত আছে আরও
শেয়ারের রিটার্ন ও ঝুঁকির সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করতে গেলে বিচার্য বিষয় অবশ্য আরও রয়েছে। যেমন
আর্নিং পার শেয়ার: মানে শেয়ার পিছু আয়। এটি সংস্থার নিট লাভ করার সম্ভাবনা যাচাইয়ের পথ। এটি হিসাব করতে সংস্থার মোট আয় থেকে বাদ দিতে হয় লগ্নিকারীদের দেওয়া ডিভিডেন্ড। তার পর সেটিকে বাজারে সংস্থার মোট শেয়ার সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। এর থেকে বোঝা যায় সংস্থার মুনাফার কতটা অংশ প্রতিটি শেয়ারে বরাদ্দ হচ্ছে। সাধারণ ভাবে সংস্থার শেয়ার পিছু আয় বাড়তে থাকাই ভাল লক্ষণ।
প্রাইস টু আর্নিং রেশিও: বাজারে কোনও সংস্থার শেয়ার দরকে শেয়ার পিছু আয় দিয়ে ভাগ করে এটা বার করা হয়। এতে বোঝা যায় সংস্থা কতটা দামি। এ ক্ষেত্রে একই সঙ্গে সংস্থাটি যে শিল্পের অন্তভুর্ক্ত, তার পি/ই রেশিও-ও দেখুন। এ বার দু’টির তুলনা করুন। অনেকেই মনে করেন সংস্থার রেশিও শিল্পের রেশিও-র থেকে কম হলেই ভাল। বেশি হলে সংস্থা ‘ওভারপ্রাইসড’ (দাম যা হওয়া উচিত, তার বেশি) হওয়ার ভয় থাকে। সে ক্ষেত্রে সামান্য এ দিক-ও দিকেই শেয়ার দর ঝপ করে পড়ে যেতে পারে।
কোন সংস্থার শেয়ার: ফান্ড কোন সংস্থার শেয়ারকে বেছে নিচ্ছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। সংশ্লিষ্ট সংস্থার পণ্যের চাহিদা কমলে, পরিচালকদের দক্ষতার অভাব থাকলে, ভুলভাল সিদ্ধান্ত নিলে বা সংস্থার কর্মী বিক্ষোভ হিংসাত্মক রূপ নিলে, আগামী দিনে সংস্থাটির শেয়ার দর পড়তে পারে। আবার সংস্থা ভাল হলে, তার প্রভাবও দরে পড়বে।
বাজার পরিস্থিতি: ঝুঁকির অন্য আর এক দিক হল বাজারের অবস্থা। আর্থিক সঙ্কট, রাজনৈতিক অরাজকতা লগ্নির পরিবেশটাকেই অনেকটাই অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.