সদর ছাড়ালেই বেপরোয়া আলুর দাম
জেলার বাজারে আলুর দামের ওঠানামা লেগেই রয়েছে।
বর্ধমান শহরের বাজারে কয়েক দিন ধরেই সরকার নির্ধারিত ১৩ টাকায় আলু বিক্রি হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত সেই সব আলুর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ক্রেতারা। বুধবার অবশ্য সেই অভিযোগ আর তেমন ওঠেনি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। শহরের বাজারে আলুর জোগানও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কাটোয়া ও কালনার বাজারে এ দিনও বেশি দামে আলু বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ।
সোমবার কাটোয়ার বাজারগুলিতে জ্যোতি আলু ছিল ১৩ টাকা কেজি। ভাইফোঁটার দিন তা দাঁড়ায় ১৪ টাকায়। বুধবার সেই দাম বেড়ে হয়েছে ১৬ টাকা। ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। কাটোয়ার মহকুমাশাসক আর অর্জুন বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
ব্যবসায়ীদের থেকে জানা গিয়েছে, কাটোয়ায় দিনে গড়ে ১৫০ মেট্রিক টন আলু প্রয়োজন। বুধবার শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা যায়, আলুর জোগানে এখনও টান পড়েনি। তবে খুচরো ব্যবসায়ীদের দাবি, বিক্রিতে টান পড়তে শুরু করেছে। ক্রেতা ধরে রাখার জন্য কেউ কেউ ১৩-১৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করলেও তার মান নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। স্থানীয় দীনবন্ধু মার্কেটের খুচরো ব্যবসায়ী অসীমা মণ্ডল, হাজি নওয়াজ মার্কেটের নিতাই হালদারদের দাবি, “বাজারে প্রচুর আলুর প্যাকেট মজুত। তবু আলু বিক্রি কমে গিয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে কয়েক দিন পরে লোকসানে আলু বিক্রি করতে হবে।”
কাটোয়া বাজারে। —নিজস্ব চিত্র।
ব্যবসায়ীরা জানান, মঙ্গলবার বাজারে আলুর প্যাকেটের (৫০ কেজি আলু) দাম ছিল ৬২০ টাকা। বুধবার তা ১০০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। প্রায় সব ব্যবসায়ীরই দাবি, কোনও মতেই ১৩ টাকা দরে আলু বিক্রি সম্ভব নয়। প্রশাসন যদি ‘চাপ’ দেয় তাহলে খুচরো ব্যবসায়ীরা আলু তুলবে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে পাইকারী ব্যবসায়ীদের। কয়েকজন ইতিমধ্যেই আলুর প্যাকেট তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন। পাইকারি আলু ব্যবসায়ী গৌর বণিক বলেন, “পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, বাজারে নতুন আলু না আসা পর্যন্ত সঙ্কট কাটবে না।”
কালনাতেও আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখি। বুধবার শহরের খুচরো বাজারে আলুর দাম ছিল ১৪-১৫ টাকা। পাইকারি বাজারে দাম ঘোরাফেরা করেছে ১২-১৩ টাকায়। সমস্যা রয়েছে দুর্গাপুরেও। শহরে আলুর চাহিদার তুলনায় জোগান কম। তাই বুধবারেও দুর্গাপুরের সব বাজারে আলু পাঠাতে পারেনি প্রশাসন। মঙ্গলবার যে পাঁচশো বস্তা আলু শহরে ঢুকেছিল তা মূলত স্টেশন বাজারেই বিক্রি হয়ে যায়। সামান্য কিছু গিয়েছিল মামরা বাজার পর্যন্ত। প্রশাসন সূত্রে খবর, বাকি বাজারগুলিতে সরবরাহের জন্য ফের তিন ট্রাক আলু চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার এডিজি (এনফোর্সমেন্ট) মৃত্যুঞ্জয়কুমার সিংহের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দুর্গাপুর ও আসানসোল শিল্পাঞ্চল এলাকার বাজারের চাহিদা পূরণ করতে ১৫ ট্রাক করে আলু পাঠাবে কৃষি বিপণন দফতর। প্রতি ট্রাকে থাকবে তিনশো বস্তা করে আলু। প্রতিটি বাজারে চলবে কড়া নজরদারি। ভিন জেলা ও ভিন রাজ্যে আলু যাতে না যায় সেদিকেও কড়া নজর রাখবে প্রশাসন। বৈঠকে আরও ঠিক হয়েছে, বছর শেষে উদ্বৃত্ত আলু প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে ভিন জেলায় পাঠানো যাবে।
মহকুমা শাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, “ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দর চাইলেও বহু জায়গাতেই ক্রেতারা সেটার প্রতিবাদ করছেন না। সেই সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.