মৌলানি বাজার এলাকায় দেহ ফেলে পালিয়ে যাওয়া বেপরোয়া অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ মঙ্গলবারেও না মেলায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রাতের রাস্তায় পুলিশি টহল ও নজরদারি নিয়েও। ঘটনায় উদ্বিগ্ন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম জেলা পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি বলেন, “কেমন করে একটি অ্যাম্বুল্যান্স রাস্তায় দেহ ফেলে পালিয়ে গেল সেটাই বুঝতে পারছি না। রাতে রাস্তায় টহল বাড়ানোর জন্য জেলা পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।”
রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ময়নাগুড়ির ব্রহ্মপুর সংলগ্ন সিংহপাড়া এলাকার বাসিন্দা হরেন্দ্রনাথ সিংহ নামে ৫১ বছর বয়সী এক চাষির দেহ প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মৌলানি বাজার সংলগ্ন রাস্তায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স ফেলে যায় বলে অভিযোগ। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও পুলিশ রহস্যের কিনারা করতে পারেনি। মৌলানি এলাকা থেকে নির্বাচিত মাল পঞ্চায়েত সমিতির আরএসপি সদস্য মহাদেব রায় বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স খুঁজে বার করতে এত দেরি হবে কেন? দেহ উদ্ধারের পরেই ব্যবস্থা নিলে এই পরিস্থিতি হত না।” একই অভিযোগ ময়নাগুড়ির আরএসপি বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারীরও। নাগরাকাটার কংগ্রেস বিধায়ক জোসেফ মুণ্ডা বলেন, “যে অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে আমরা ভরসা করে থাকি, সেখান থেকে দেহ রাস্তায় ফেলে দেওয়া হবে, এটা ভাবতে পারছি না। পুলিশের উচিত দ্রুত গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা।” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “আমরা বসে নেই। ঘটনার তদন্ত চলছে। অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ করা হচ্ছে। সমস্ত থানাকে সতর্ক করা হয়েছে।”
মৃত চাষি হরেন্দ্রনাথবাবুর পরিবার এবং এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই পুলিশের একাংশের ভূমিকায় হতাশ। স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নৃপেন রায় বলেন, “এ ভাবে চলতে থাকলে আমরা কেউ রাস্তায় চলাফেরা করতে পারব না।” রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ বাজারে যান হরেন্দ্রনাথবাবু রাতে বাড়িতে ফেরেননি। পরিবারের লোকজন তাঁর দুমড়ে যাওয়া সাইকেল উদ্ধার করেন। বাসিন্দারা জানান, রাতে একটি অ্যাম্বুল্যান্সকে ঝড়ের গতিতে ছুটে যেতে অনেকে দেখেছেন। মৃত চাষির ভাইপো দীপক রায় বলেন, “বুঝতে পারছি না রাস্তায় টহলরত পুলিশ কেন সেটা আটক করল না!”
|