গত পাঁচ দিন ধরে বহরমপুরের ২৮টি ওয়ার্ডের কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে সাতটি কর্মিসভা করলেন অধীর চৌধুরী। আগামী ২২ নভেম্বর পুরভোট উপলক্ষে মঙ্গলবার গোরাবাজারে ছিল শেষ কর্মিসভা। সেখানে অধীরবাবু কখনও ‘পাশের বাড়ি ছেলে’। কখনও ‘দাদা’। কখনও ‘জেলা কংগ্রেস সভাপতি’। কখনও আবার বহরমপুরের ‘সাংসদ’। ২১, ২২ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কর্মীরা এ দিন ওই সভায় ছিলেন।
দাদার কাছে কারও আব্দার ক্লাব ঘর গড়ে দেওয়ার। পানীয় জল-শৌচালয় থেকে পাশের বাড়ির ঝামেলাও সামলাতে হয়েছে এদিন তাঁকে। কেউ আবার রিকশা ভাড়ার সঠিক তালিকা তৈরির আবেদনও করেন। সকলের সব কথা মন দিয়ে শোনার পরে বক্তব্য রাখতে উঠে অধীর চৌধুরী বলেন, “আমাদের বোর্ড পরিচালনায় কোনও ভুল বা ত্রুটি থাকলে সংশোধন করে নেব। আজ ড্রেন হয়নি, কাল হবে। রাস্তা হবে। ক্লাব ঘরও হবে। রিকশা ভাড়ার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।” অধীরবাবু বলেন, “বহরমপুর শহরে এক সময়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ ছিল। সন্ধ্যার পরে মহিলারা বাড়ির বাইরে বের হতে পারতেন না। ব্যবসায়ীদের উপরে কম অত্যাচার হয়নি। কিন্তু আমরা দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করেছি। যে কাজ পুলিশ প্রশাসনের করার কথা, সেই কাজ পুরসভা করেছে। পুরসভা শুধু উন্নয়ন করে তাই নয়, এলাকার মানুষের শান্তিতে বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশও তৈরি করেছে। এখন শহরে শান্তি এসেছে। ফের দুর্বৃত্তদের দ্বারা শান্তির পরিবেশ নষ্ট না হয়, তা দেখার দায়িত্ব কিন্তু সকলের।” |
অভিযোগ ওঠে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে। অধীরবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার জওহরলাল নেহরু আর্বান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্প খাতে বহরমপুর পুরসভায় অর্থ বরাদ্দ করেছে। ওই প্রকল্পে পাইপ লাইনের সাহায্যে প্রতি বাড়িতে পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে বহরমপুরের প্রতিটি পাড়ায় পাইপলাইন বসানো হবে। তার পরে সেই পাইপলাইন থেকে প্রতিটি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হবে। এর ফলে ২৮টি ওয়ার্ডের মানুষের পানীয় জলের আর কোনও সমস্যা থাকবে না। কিন্তু ওই কাজের জন্য সময় দিতে হবে।”
এক জন কংগ্রেস কর্মী বিদায়ী কাউন্সিলর প্রশান্ত সেনের সুনাম করছিলেন। তা শুনে অধীরবাবুর সরস মন্তব্য, “ঠিক আছে সেনকে গাঁধী কলোনির জন্য উৎসর্গ করা হল। সেনের কথা বলছ, উপ-পুরপ্রধান সুশীল পালের কথা বললে। আমার কথা তো বলছ না। আমাকে কি তোমাদের লাগবে না!” এর পরেই ‘সিরিয়াস’ অধীরবাবু বলেন, “বাংলার কংগ্রেস বহরমপুর পুরভোটের দিকে তাকিয়ে আছে। এ বারও বিরোধী শূন্য পুরবোর্ড গঠন করতে পারলে বাংলার কংগ্রেস অক্সিজেন পাবে।” |