লক্ষ্য বিরোধী-শূন্য বহরমপুর পুরসভা। তাই পুরসভা ভোটের মুখে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মেজাজেই ব্যাট চালালেন।
রবিবাসরীয় দুপুরে বহরমপুর গ্র্যান্ট হলের কর্মিসভায় অধীরবাবু যেন ভোট জয়ের ইনিংস সাজালেন সবই চার-ছক্কা মেরে। শেষ পর্যন্ত বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীও বাধ্য হলেন বলতে, “বার বার মিথ্যা মামলায় পুলিশ তাঁকে জেলে ঢোকানোর চেষ্টা করছে। আগামী ১৬ নভেম্বর আগাম জামিন মিলবে কিনা, তা জানা নেই। কিন্তু রাজনৈতিক সন্ন্যাসীর মত কিছুই অধীর চৌধুরীকে স্পর্শ করে না। তাঁর ওই আত্মবিশ্বাস এ দিনের কর্মীসভাতেও ছড়িয়ে দিয়ে গেলেন।”
দীপাবলি উৎসবের মেজাজ, রবিবাসরীয় ছুটির দুপুরের আমেজকে দূরে সরিয়ে রেখে বহরমপুর ‘গ্র্যান্ট হল’-এ তখন কংগ্রেস কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়। অধীরবাবুকে দেখেই অভিযোগ, “দাদা, গত কয়েক দিন ধরে বিরোধী দলের লোকজন আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখাচ্ছে।” ওই কর্মীর কথা শেষ হওয়ার আগেই অধীরবাবুর ওভারবাউন্ডারি--“আমাদের চেয়ে বড় মস্তান বহরমপুরে কেউ আছে নাকি!” এর পরেই অধীরবাবুর সংযোজন, “সন্ধ্যার পরে যারা বাড়ির বাইরে বের হতে পারে না, তাদেরকে আবার ভয় কীসের! পুলিশ ও শাসক দলের উপরে ভর করে মস্তানি সকলেই করতে পারে। আমাদের পুলিশ নেই। শাসক দলও নেই। কিন্তু আমাদের মস্তানি শহরের উন্নয়ন, আমাদের মস্তানি বহরমপুরের সাধারণ মানুষ। কোনও কিছুতেই ভয় পেলে চলবে না।”
হরিজনবস্তি ও ক্ষেত্র হাজার লেনে পানীয় জলের সমস্যা। অধীরবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার রাজীব গাঁধীর নামে একটি জলপ্রকল্প খাতে বহরমপুর পুরসভায় অর্থ বরাদ্দ করেছে। ওই প্রকল্পে পাইপ লাইনের সাহায্যে প্রতি বাড়িতে পানীয় জল সরবহার করা হবে। ওই প্রকল্পে আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে বহরমপুরের ২৮টি ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। ৯০ ভাগ কাজ হয়েছে আর ১০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। আমার উপরে বিশ্বাস রাখুন। আপনাদের কাছে দুই-তিন মাস সময় চাই।”
এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি তথা বহরমপুর পুরসভা নির্বাচনে দলের স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর বলেন, “ভোটের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাঁকে মিথ্যা অভিযোগ করতেই হবে। তৃণমূলের বিরোধিতা করার জন্যই তিনি বিরোধিতা করেন, সেটা কারও অজানা নয়।”
তবে এ বারও যদি বিরোধী শূন্য পুরবোর্ড হয়, সেক্ষেত্রে ‘বিরোধী দলের’ ভূমিকায় যে তিনিই থাকবেন, কর্মীসভায় জানিয়ে দিলেন তাও। তাঁর সাফ কথা, “বোর্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। পুরসভার বেআইনি কোনও কাজ দেখলে আপনারা কংগ্রেস কর্মীরা সামনে দাঁড়িয়ে থেকে রুখে দিন। আমি বিশ্বাস করি পুরবোর্ড সাধারণ মানুষের। সেখানে কারও একচ্ছত্র আধিপত্য বরদাস্ত করা হবে না।”
তাঁর লক্ষ্য ২৮-০!
|