মুর্শিদাবাদ পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে আগামী ২২ নভেম্বর উপনির্বাচন রয়েছে। ওই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আগামী ৩০ নভম্বর পর্যন্ত পুরসভার কোনও বিশেষ সভা ডাকা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ফলে মুর্শিদাবাদ পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তিন জন কংগ্রেস কাউন্সিলর-সহ মোট ৮ জন কাউন্সিলরের আনা অনাস্থা সভাও আপাতত ভেস্তে গেল। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রত্নাকর রাও বলেন, “মুর্শিদাবাদ পুরসভায় আগামী ২২ নভেম্বর উপনির্বাচন। ওই নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন পুরসভা কোনও বিশেষ সভা ডাকতে পারবে না বলে শুক্রবার চিঠি দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।”
এর আগে গত ২২ অক্টোবর পুরপ্রধান কংগ্রেসের শম্ভুনাথ ঘোষের অপসারণ চেয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি জমা পড়ে পুরসভায়। ওই চিঠিতে কংগ্রেসের প্রতীক চিহ্নে জয়ী তিন জন কাউন্সিলর-সহ যে ৮ জনের সই রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসের কাউন্সিলর মেহেদি আলম মির্জা, সাইদা বিবি ও তপন মণ্ডল। বাকি পাঁচ কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ ধর, গোকুল বিশ্বাস, ভদ্দরি মণ্ডল ও মাধুরী মণ্ডল নির্দল প্রার্থী হিসেবে এবং চম্পা দাস তৃণমূলের প্রতীক চিহ্নে জয়ী হন। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পুরভোটে ১৬ আসনের মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১০টি আসনে জয়ী হয়ে কংগ্রেস একক ভাবে পুরবোর্ড দখল করে।
পুরবোর্ড গঠনের কয়েক মাসের মধ্যে জনবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই শূন্য পদে আগামী ২২ নভেম্বর উপনির্বাচন রয়েছে। এই অবস্থায় ‘অধীর অনুগামী’ কংগ্রেসের সাত কাউন্সিলর লালবাগ মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন। পুরপ্রধান শম্ভুনাথ ঘোষ বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী অপসারণের চিঠি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে অনাস্থার সভা ডাকতে হবে। মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে আগামী ৫ নভেম্বর ওই সভা ডাকার কথা জানাই। এমনকী পুরসভার ১৫ জন কাউন্সিলরকে চিঠি দিয়ে ওই সভায় হাজির থাকার কথাও জানানো হয়।”
কিন্তু উপনির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন পুরসভার পক্ষ থেকে কোনও জরুরি সভা ডাকতে পারবে কি না, মহকুমা প্রশাসনের তরফে তা জানতে চেয়ে জেলাশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। জেলাশাসক বিষয়টি জানতে চান রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে। সেই মত আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কোনও বিশেষ সভা ডাকা যাবে না বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়। পুরপ্রধান বলেন, “ফলে আগামী ৫ নভেম্বরের সভা বাতিল হয়ে গেল এবং ওই সভা বাতিলের কথা আজ, সোমবার কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়ে জানানো হবে।”
কংগ্রেসের কাউন্সিলর বিপ্লব চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ডাকা সভা কোনও কারণে এক বার বাতিল হয়ে গেলে পুর-আইন অনুযায়ী সেই পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে ছ’মাসের আগে অনাস্থা আনা যায় না। ফলে আগামী ছ’মাস বিরোধীরা পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে কোনও অনাস্থা আনতে পারবেন না।”
জেলাশাসক বলেন, “পুর-আইন খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আপাতত আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কোনও সভা ডাকতে পারবে না পুরবোর্ড।”
|