আগে এলাকায় কালীপুজো হতো দুটি। একটি পুজো হত স্থানীয় জমিদারের উদ্যোগে। অন্যটি মিলিতভাবে করতেন এলাকার গরিবগুর্বোরা। রাজার খেয়াল হল ওই দুই বুড়ি কালী ও বাজার কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের কাঁধে দেবী প্রতিমাকে নিয়ে দৌড়তে হবে। রাজা বসে সেই দৌড় দেখবেন। দেবী প্রতিমাকে নিয়ে দৌড়ে যারা জয়ী হবেন তাদের পুরস্কৃত করবেন রাজা। হলও তাই। সে ৩০০ বছর আগেকার কথা। এখন রাজা নেই। কিন্তু মালদহের চাঁচল রাজার উদ্যোগে শুরু হওয়া ওই কালীদৌড় প্রথা বন্ধ হয়নি। এখন অবশ্য পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। |
‘কালীদৌড়’:চাঁচলের মালতিপুরে ৩০০ বছরের রীতি মেনে কালীপুজোর
পরের রাতে ‘কালীদৌড়’কে ঘিরে মেতে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা।
বাপি মজুমদারের তোলা ছবি। |
এলাকায় এখন ৬টি সর্বজনীন পুজো হয়। তবে কালী পুজো নয়, পুজোর পরদিন বিসর্জনের আগে কালীদৌড়কে ঘিরেই মেতে ওঠেন মালদহের চাঁচলের মালতিপুর লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। ৩০০ বছরের প্রথা মেনে রবিবার মালতিপুর দুর্গা মণ্ডপের সামনের খোলা মাঠে প্রতি বছর ওই কালীদৌড় হয়। সে এক জমজমাট ব্যপার। পুজোর উদ্যোক্তারা প্রথমে মণ্ডপ থেকে দেবী প্রতিমাকে শক্ত বাঁশের মাচায় চাপিয়ে কাঁধে তুলে নেন। গোটা এলাকা ঘুরে হাজির হন কালীদৌড়ের আসরে। মণ্ডপে ঢোকার ৪টি রাস্তা রয়েছে। এক এক করে ঢাকের তালে সেখানে দেবী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে নাচতে নাচতে হাজির হন ৬টি পুজোর উদ্যোক্তারা। সঙ্গে চলতে থাকে আতসবাজির প্রদর্শনী। এর পর মণ্ডপে শুরু হয় কালীদৌড়। ঢাকের তালে কাঁধে দেবী প্রতিমা নিয়ে প্রত্যেকেই ছুটতে থাকেন। দেবীকে কাঁধে নিয়ে এলাকা প্রদক্ষিণ করে ফের ফিরে আসেন মণ্ডপে। তার পর ফের শুরু হয় কালীদৌড়। নিয়ম মেনে এভাবেই ৫ বার যে যার মণ্ডপে ফিরে গিয়ে এলাকা প্রদক্ষিণ করে দৌড়ের আসরে হাজির হন। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অবধি চলতে থাকে ওই কালীদৌড় প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা হলেও অবশ্য এখন আর পুরস্কৃত করার রেওয়াজ নেই। তবে যারা জয়ী হন, আত্মতৃপ্তিটা তাদের কাছে বড় পাওনা। |