সম্পাদক সমীপেষু ...
ডালহৌসি পাহাড়ে
রবীন্দ্রনাথের হিমালয় দর্শন ও সান্নিধ্য নিয়ে খুবই মনোগ্রাহী একটি লেখায় (‘হিমালয় ও কয়েকজন...’, ওয়ান স্টপ, ২১-৯) সুভাষচন্দ্র বসুর সামান্য উল্লেখ ছিল। সেই সূত্রেই এই লেখা।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কর্মময় জীবনে কারাবাস একটি বিশেষ অধ্যায় জুড়ে ছিল। বহু বার তিনি কারারুদ্ধ হয়েছেন, নির্বাসিত হয়েছেন। বর্মাদেশে নির্বাসন একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। বর্মা তখন ভারতের মতো ইংরেজ অধ্যুষিত। তাই সুভাষকে সুদূর মান্দালয় জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানকার অস্বাস্থ্যকর জলহাওয়ায় তিনি অল্পদিনেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন।
কলকাতা থেকে ইংরেজ ডাক্তার-সহ ডা. নীলরতন সরকার, ডা. সুনীলচন্দ্র বসু তাঁকে পরীক্ষা করে বলেন যে, অচিরেই যদি তাঁকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিয়ে যাওয়া না-হয়, ক্ষয়রোগ অর্থাৎ টি বি-তে তিনি আক্রান্ত হবেন। তখনও এই রোগের ভাল চিকিৎসা ছিল না।
ইংরেজ সরকার এই রিপোর্ট পেয়ে তাঁকে মুক্তি দিলেন। জাহাজে করে সুভাষ কলকাতায় মেজদা, শরৎচন্দ্র বসুর বাড়ি ফিরে আসেন। প্রথমে তাঁকে ভাওয়ালি স্যানাটোরিয়ামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর সুভাষ বন্ধুবর এন আর ধরমবীর-এর আতিথ্য গ্রহণ করেন ডালহৌসি পাহাড়ে। ধরমবীর প্রথম জীবনে লাহৌরের বাসিন্দা ছিলেন। ভারত তখনও দ্বিখণ্ডিত হয়নি। ধরমবীর-এর স্ত্রী ইংরেজ মহিলা, এবং সম্ভবত কেমব্রিজ-এ সুভাষের সহপাঠিনী ছিলেন। তিনি ভারতকে নিজ দেশ বলে গ্রহণ করেছিলেন ও মনেপ্রাণে ভারতীয় নারী হয়ে গিয়েছিলেন।
ধরমবীরের বাংলোর নাম ‘কায়নাথ’ এবং ১৯৩৩ সালে সেটি নির্মিত হয়েছিল। ডালহৌসির প্রধান সরকারি পোস্ট অফিস থেকে ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত। এই বাড়িতেই ধরমবীরদের অতিথি হয়ে সুভাষচন্দ্র প্রায় সাত মাস ছিলেন। ১৯৩৭ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি সেখানে যান। শ্রীমতী ধরমবীর নিজের ভাইয়ের মতো তাঁকে সেবাযত্ন করেছিলেন। কাছেই একটি পাহাড়ি ঝর্নার জলের ধারে তিনি হাঁটতে যেতেন ও তারই সুমিষ্ট জল পানের জন্যও ব্যবহৃত হত। আজ সেডার গাছে সারি দেওয়া ঘেরা সেই ঝর্নার নাম ‘সুভাষ বাউলি’। শহরে একটি রাস্তা ও এলাকার নাম ‘সুভাষ চক’। তার উপরেরটির নাম ‘গাঁধী চক’।
আজ যাঁরা ডালহৌসি বেড়াতে যান, তাঁরা অনেকে থাকেন ‘মেহের লজ’-এ। সেটি এক সময় ছিল ধরমবীরদের বাড়ি, এখন একটি হোটেল হয়েছে। মালিক জানান, অতিথিরা সেই ঘরে থাকতেও পারেন। সামনে একটি ছোট বারান্দা। সুভাষ নাকি সেখানে বসে থাকতেন একটি আরামকেদারায়।
বিষ্ণু দে’র ‘ভবিষ্যত’
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য (‘কখনও ভুলিস না’, ৪-১০) বিষ্ণু দে-র বইয়ের নাম লিখেছেন ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’। প্রকৃতপক্ষে, বিষ্ণু দে-র বইয়ের তথা কাব্যের নাম ‘স্মৃতি-সত্তা-ভবিষ্যত’ (১৯৬৩)। ‘ভবিষ্যৎ’ (সং. ভূ+শতৃ) বানানে ‘ৎ’-ই হওয়া উচিত, কিন্তু বিষ্ণু দে-র কাব্যে ‘ত’ ব্যবহৃত হয়েছে। শুনেছি, যামিনী রায় কাব্যটির প্রচ্ছদপট আঁকার সময়ই ‘ভবিষ্যত’ বানান লিখেছিলেন। কবি শিল্পীর প্রতি এতই অনুরাগী ছিলেন যে, ‘ভবিষ্যত’-এর ‘ত’ ‘ৎ’ করেননি। বিষ্ণু দে-র অন্য একটি বইয়ের নাম ‘সাহিত্যের ভবিষ্যৎ’। সেখানে ‘ভবিষ্যৎ’ বানানে ‘ৎ’-ই আছে।
শিল্পীদের শিল্পী
‘উনি তো শিল্পীদের শিল্পী, তা না হলে কি এমন গান গাওয়া যায়!’ ‘ওগো স্বপ্নস্বরূপিণী’ রবীন্দ্রনাথের গানটি রেকর্ডে শুনে আমাদের গানের ক্লাসে মান্না দে সম্পর্কে এই মন্তব্যটি প্রখ্যাত শিল্পী সাগর সেন-এর।
আবার, সুরকার ও শিল্পী শৈলেন মুখোপাধ্যায়ের কাছে শুনেছিলাম, ‘দোলনা’ সিনেমায় শৈলেনদা মুম্বই গিয়ে লতা মঙ্গেশকরকে দিয়ে ‘আমার কথা শিশিরধোয়া হাসনুহানার কলি’ গানটি গাইয়েছিলেন। তখন লতাজির সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিলেন শৈলেনদা। এই নতুন সুরকারের সুরে তাঁকে দিয়ে গানটি রেকর্ড করানোর পিছনে সব কৃতিত্ব ছিল মান্না দে-র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.