কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া হস্তিশাবক লক্ষ্মীর মৃত্যু হল। রবিবার বিকেল তিনটে নাগাদ ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানায় অসুস্থ শাবকটির মৃত্যু হয়। গত ২১ অক্টোবর ঝাড়গ্রাম মহকুমার সাঁকরাইল ব্লকের অন্তর্গত কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের কাশীডাঙার জঙ্গলে দলছুট অসুস্থ শাবকটিকে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে বনকর্মীরা শাবকটিকে উদ্ধার করে সেদিনই ঝাড়গ্রাম শহরের উপকণ্ঠে বন দফতরের মিনি চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসেন। তিন জন প্রাণী চিকিৎসকের একটি মেডিক্যাল বোর্ড শাবকটির চিকিৎসা শুরু করে। শুরুতে অসুস্থ শাবকটির উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাও ছিল না। ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দেয় শাবকটি। গত ২৬ অক্টোবর শাবকটি উঠে দাঁড়ায়। আখের রস, নারকেলের দুধ ও ছাগলের দুধ মিলিয়ে প্রতিদিন দশ লিটার তরল পান করে শাবকটি। পাঁচ দিন মোটামুটি সুস্থ ছিল শাবকটি। শালবল্লির ঘেরাটোপের মধ্যে বল নিয়ে খেলাও করেছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয় শাবকটি। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। শনিবার রাতে শাবকটি শুয়ে পড়ে। রবিবার সকালে ফের শাবকটিকে স্যালাইন দেন চিকিৎসকেরা। চার বোতল স্যালাইন নেয় শাবকটি। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে এ দিন বিকেলে শাবকটির মৃত্যু হয়। প্রাণী চিকিৎসক অরুণাংশু প্রতিহার বলেন, “মাত্র তিন মাস বয়সী শাবকটিকে বাঁচানোর জন্য মাতৃদুগ্ধ জরুরি ছিল। কিন্তু দলছুট ছোট্ট শাবকটিকে তা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তবে আমরা সাধ্যমতো বিকল্প সব চেষ্টাই করেছিলাম।” চিকিৎসকেরা শাবকটির নাম দিয়েছিলেন ‘লক্ষ্মী’। এই কয়েক দিনে চিকিৎসক ও বনকর্মীদের নয়নের মণি হয়ে উঠেছিল শাবকটি। সকলেরই তাই মন খারাপ।
চিড়িয়াখানার কর্মী মিঠু মাহাতো চোখের জল মুছে বলেন, “আমাদের সকলের মায়া বাড়িয়ে চলে গেল লক্ষ্মী।” ঝাড়গ্রামের ডিএফও আশিসকুমার সামন্ত বলেন, “সোমবার সকালে শাবকটির দেহের ময়না তদন্ত করা হবে। তারপর দেহটি পুড়িয়ে ফেলা হবে।”
|
পুরনো খবর: অসুস্থ হস্তিশাবক |