বন্যপ্রাণী এবং বনাঞ্চল সংরক্ষণের উদ্দেশে বিলেতের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা নিতে চলেছে ত্রিপুরা সরকার। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের বন দফতরের কয়েকজন প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যলয়ের সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী উদ্যানটি দেখে এসেছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বন দফতরের মন্ত্রী জিতেন চৌধুরী-সহ কয়েক জন কর্তা। দফতরের সচিব ভি কে বহুগুণা বলেন, ‘‘রাজ্য বন দফতর এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একে অপরকে সহযোগিতা করবে। এ প্রসঙ্গে বিলেতের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী উদ্যান সংরক্ষণে ভারপ্রাপ্তদের সঙ্গে রাজ্যের প্রতিনিধিদের প্রাথমিক স্তরের কথাবার্তা হয়েছে।’’
রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলি দেখতে শীঘ্রই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা রাজ্যে আসবেন বলে সচিব জানান। ত্রিপুরার সিপাহিজলা এবং তৃষ্ণা অভয়ারণ্যকে আরও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণে জন্য বন দফতরের চিন্তাভাবনা চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। বন দফতরের প্রিন্সিপ্যাল ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন অতুলকুমার গুপ্ত জানান, ‘‘রাজ্যের অভয়ারণ্যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা যেমন নেওয়া হবে, তেমনই বিশ্ববিদ্যালয় এখানকার বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেবেন। যৌথ উদ্যোগে একটি ‘কোলাবরেশন প্রোগ্রাম’ চলবে।’’
ত্রিপুরার বনাঞ্চল সংরক্ষণ এবং নির্দিষ্ট কয়েকটি অভয়ারণ্যে যে সব বন্যপ্রাণী রয়েছে, তাদের সংরক্ষণে কী কী আধুনিক ব্যবস্থা জরুরি সে বিষয়ে ‘কারিগরী’ পরামর্শের আদানপ্রদান হবে দু’দেশের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। শুধু পরমর্শ আদানপ্রদানেই বিষয়টি থেমে যাবে না। বিলেতের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত যে গবেষণাগার রয়েছে, তার সঙ্গে রাজ্যের দু’টি অভয়ারণ্যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞরা একই সঙ্গে যাতে কাজ করতে পারে তার জন্যও কথাবার্তা হয়েছে। অতুলবাবুর বক্তব্য, ‘‘কেমব্রিজের বন্যপ্রাণী উদ্যানটি আমরা দেখে এসেছি। ওদের সংরক্ষণ পদ্ধতিটি একেবারেই স্বতন্ত্র।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মোট এলাকার ৬০ শতাংই বনভূমি হলেও, সেই পরিমাণ ক্রমশ কমে যাচ্ছে। এক সময়ে ত্রিপুরার বনাঞ্চলে বাঘ দেখতে পাওয়া যেত। এখন তা প্রায় হারিয়েই গিয়েছে। বিভিন্ন জীববৈচিত্র্যে এক সময়ে সমৃদ্ধ ছিল রাজ্যের বনাঞ্চল। এখন বহু প্রাণীই ‘লুপ্তপ্রায়’ শ্রেণিভুক্ত। দফতর যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। বন্যপ্রাণীর পাশাপাশি বনাঞ্চল সংরক্ষণে বিশ্বের অন্য দেশ কী পদক্ষেপ করছে, সেটাও জানা প্রয়োজন। তাই কেমব্রিজের সঙ্গে ‘যৌথ সহযোগিতা কেন্দ্রিক কর্মসূচি’র পথে এগোচ্ছে রাজ্য। |